সুমিত চক্রবর্তী
শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা? খুব ছোটবেলা থেকেই কবিতার লাইনটা শুনে আসছি। কে সুপর্ণা, তাও জানি না। তাঁর সঙ্গে শীতের কী সম্পর্ক, তাও জানি না। তবে, শীত আর কিছুতেই আসছে না। এমনিতেই এখন প্রায় দশ মাস গ্রীষ্মকাল। এখন তো আবার পৌষ মাসেও জৈষ্ঠ মাসের আমেজ এসে যাচ্ছে।
খুব ইচ্ছে ছিল, এবার সুন্দরবন যাব। এর আগে সরকারি লঞ্জ এম ভি চিত্ররেখা ও এম ভি সর্বজয়ায় সুন্দরবন গেছি। দুবারই বেশ ভাল অভিজ্ঞতা হয়েছে। এবারও ভেবেছিলাম, দুদিন বা তিনদিনের জন্য পাড়ি দেব সুন্দরবনে।
পুজোর পর থেকেই সার্চ করে চলেছি। এখনও সেই এম ভি সর্বজয়া বা এম ভি চিত্ররেখার হদিশ নেই। কবে চালু হবে, কিছুই জানা যাচ্ছে না। একদিন পর্যটন উন্নয়ন নিগমে ফোন করলাম। তাঁরাও কিছু জানাতে পারলেন না।
দেখতে দেখতে নতুন বছরও এসে গেল। এখনও সেই লঞ্চের দেখা নেই। এমনিতেই যা গরম পড়ছে, জানুয়ারির পর আদৌ সুন্দরবন যাওয়ার মতো পরিবেশ থাকবে কিনা বলা মুশকিল। সন্দরবন ট্যুর মানে তিন মাসের ট্যুর। বাকি ন মাস সেখানে সেভাবে যাওয়া যাবে না।
বেসরকারি বেশ কিছু ট্যুর অপারেটর আছেন। তাঁরা বিভিন্ন জায়গা থেকে প্যাকেজ ট্যুরে নিয়ে যান। এবছরও সেইসব প্যাকেজ ট্যুর চালু হয়ে গেছে। কিন্তু সরকারি পরিষেবা এখনও কেন চালু হল না, বোঝা মুশকিল।
মানছি, এ বছর পরিস্থিতি কিছুটা অন্যরকম। কিন্তু অন্যান্য সব জায়গায় পর্যটনের দরজা খুলে গেছে। এমনকী গঙ্গাসাগর মেলাকে ঘিরেও সরকারি প্যাকেজ ট্যুরের কথা ওয়েব সাইটে দেখা যাচ্ছে। বাসে কলকাতা ভ্রমণ বা সন্ধেবেলায় বাবুঘাট থেকে লঞ্চ ভ্রমণের বিজ্ঞাপনও চোখে পড়ছে। তাহলে, সুন্দরবন কী দোষ করল!
বেঙ্গল টাইমসে ভ্রমণ সংক্রান্ত বিভিন্ন লেখা পড়ি। তাই ওপেন ফোরামে পর্যটন দপ্তরের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, শীত থাকতে থাকতেই সুন্দরবন ট্যুর চালু করা হোক। এখনও সরকারি পরিষেবার ওপর মানুষ আস্থা রাখেন। এখনও বাঙালি বাংলায় ঘুরতে চায়। কিন্তু সরকার নিজেই যদি উদাসীন থাকে, তাহলে পর্যটন পিছিয়ে যায়।