স্মৃতিটুকু থাক
বিশ্বকাপ এলেই আমার রাত জাগার শুরু। শুধু আমার কেন, সবারই বোধ হয় রাত জাগার শুরু। আমার মধ্যে এই নেশাটা ধরিয়ে ছিলেন আমার প্রাইভেট টিউটর। তখন খেলা দেখলে বাড়ির লোকেরা বকাবকি করত। খেলা দেখলে নাকি পড়ায় মন থাকে না। এটা বাড়িতেও শুনতাম। স্কুলেও শুনতাম। ব্যতিক্রম ছিলেন প্রভাত কাকু। একদিন টিউশনিতে অনেকক্ষণ ধরে সবার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। কে ঢুলছে, আর কে ঢুলছে না, বুঝতে চাইছিলেন।
একজন ঢুলছিল। আমরা হাসাহাসি করছিলাম। প্রভাত কাকু বলল, কী রে, খুব ঘুম পাচ্ছে? সবাই হেসে ফেলল। ছেলেটি খুব লজ্জা পেল প্রভাত কাকু তখন আমাদের ধমকে বলল, এতে হাসার কিছু নেই। রাত জেগে খেলা দেখলে সকালে ঘুম পেতেই পারে। আর বিশ্বকাপের সময় রাত জেগে খেলা দেখাটা কোনও অন্যায় নয়। যারা দেখিসনি, তাদের বরং লজ্জা হওয়া উচিত। আমি চাই, তোরাও দেখ। বিশ্বকাপও যদি না দেখিস, তাহলে কী দেখবি? কোন কোন খেলাগুলো দেখব, সেটাও বলে দিলেন। সেই অনুযায়ী, টিউশনির রুটিন চেঞ্জ হয়ে গেল। শুনেছি, কয়েকজন গার্জেনকেও নাকি বলেছিলেন, এই সময় যদি একটু খেলা দেখে, প্লিজ বকাবকি করবেন না। বরং উৎসাহিত করুন। পড়াশোনা করলে খারাপ হলেও হতে পারে। কিন্তু খেলা দেখলে ও খারাপ হবে না। আজ কর্মসূত্রে কলকাতায়। কিন্তু বিশ্বকাপ এলেই প্রভাত কাকুর কথাগুলো খুব মনে পড়ে। এমন শিক্ষক যদি সবাই পেত!
কল্লোল সামন্ত, বেলঘরিয়া
(আপনার জীবনে যদি এমন কোনও মানুষ থাকে, তাহলে তাঁর কথা লিখে পাঠান। আর দশজন মানুষের থেকে এই প্রভাতবাবুরা আলাদা। তাঁদের কথা আরও বেশি করে তুলে ধরা প্রয়োজন। আপনার সন্ধানে এমন কেউ থাকলে, জানাবেন। এঁদের কথায় স্মৃতিটুকু থাক বিভাগটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক। )