বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: দেরিতে হলেও সুমতি ফিরল আই এফ এ–র শতাব্দী প্রাচীন আই এফ এ শিল্ডকে প্রায় কবরে পাঠিয়েছিলেন আই এফ এ কর্তারা। কবে শুরু হত, কবে শেষ হত, কারা চ্যাম্পিয়ন হল, কেউ জানতেও পারত না। আর দশটা পাড়ার টুর্নামেন্টের স্তরে এই শিল্ডকে নামিয়ে এনেছিলেন আই এফ এ কর্তারা।
অথচ, একসময় এই শিল্ডের কী রমরমাই না ছিল! ১৯১১ তে সাহেবদের হারিয়ে মোহনবাগানের শিল্ড জয় আজও সেই ক্লাবের সাফল্যের সবথেকে বড় বিজ্ঞাপন। আজও সেই শিল্ড জয়ের দিনটিকেই মোহনবাগান দিবস হিসেবে পালন করা হয়। পরাধীন ভারতে পরপর পাঁচবার শিল্ড জয়ের নজির রয়েছে মহমেডানের। সেই ক্লাবেও সেরা সাফল্যের বিজ্ঞাপন ওই টানা পাঁচবার শিল্ডজয়। ইস্টবেঙ্গলের সাফল্যের খতিয়ানেও অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে এই শিল্ড।
অথচ, কয়েক বছর ধরে আই এফ এ কর্তাদের অদূরদর্শিতায় এমন একটা ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট প্রায় কবরে যেতে বসেছিল। হঠাৎ করে অনূর্ধ্ব ১৯ টুর্নামেন্ট করে ফেলেছিলেন উৎপল গাঙ্গুলিরা। যুক্তি ছিল, এর ফলে নাকি ম্যাঞ্চেস্টার, লিভারপুল, বার্সিলোনার জুনিয়ার দলকে আনা হবে। ভবিষ্যতের তারকারা খেলতে আসবেন কলকাতায়। একটা মেগা ইভেন্ট হতে চলেছে। অনেকেই শুরুতে বিশ্বাস করেছিলেন। দু হাত তুলে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
কিন্তু কোথায় বা কী? বিদেশের নামী দল তো দূরের কথা, দেশের অন্যান্য রাজ্যের জুনিয়র দলগুলোকেই আনা গেল না। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মতো দলও আগ্রহ হারাল এই শিল্ডে। না স্পন্সর, না প্রমোশন কোনওকিছুই হল না। স্রেফ আই এফ এ কর্তাদের দূরদর্শিতার অভাবে টুর্নামেন্টটা হারিয়ে গেল বাংলার মানচিত্র থেকে।
আই এফ এ–তে পালাবদলের পর কিছু ইতিবাচক ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। যার অন্যতম হল শিল্ডের জৌলুসকে ফিরিয়ে আনা। নতুন সচিব আসার পর অন্তত চেষ্টাটা শুরু হয়েছে। আর বয়সভিত্তিক নয়, এবার সিনিয়ররাও খেলতে পারবেন শিল্ডে। চেষ্টা হচ্ছে আই লিগ ও আই এস এলের বিভিন্ন দলকে আনার। এই শিল্ডের যা ঐতিহ্য, তাতে ঠিকঠাক বোঝাতে পারলে, ভাল দল আনাটা খুব একটা কঠিন হবে না। আর মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডানের সিনিয়র দল থাকলে আরও আকর্ষণীয় হতেই পারে।
আরও কীভাবে এই টুর্নামেন্টকে আকর্ষণীয় করা যায়, এখন থেকেই ভাবুন কর্তারা। যেভাবেই হোক, আই এফ এ শিল্ডের জৌলুস ফিরিয়ে আনতে হবে। এইসব টুর্নামেন্টগুলি হারিয়ে গেলে কলকাতা ফুটবলের আকর্ষণও ফিকে হতে বাধ্য। এই সহজ সত্যিটা বোঝার জন্য আই এফ এ কে অভিনন্দন।