সুমিত চক্রবর্তী
হলুদ ট্যাক্সি নিয়ে আমাদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। মূল অভিযোগ ছিল, অধিকা্ংশ সময় ট্যাক্সি চালক গন্তব্যে যেতে চান না। কখনও দ্বিগুন বা তিনগুন ভাড়া চেয়ে বসেন। পুলিশকে জানিয়ে বা ট্যাক্সি রিফিউজাল সেকশনে অভিযোগ জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয় না। এসব কারণেই ওলা, উবেরের রমরমা দেখা গিয়েছিল কলকাতার রাস্তায়। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, তাদের পরিষেবা নিয়েও নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
একটু বৃষ্টি হলে বা অফিস টাইমে ওলা–উবের পাওয়াই যায় না। পেলেও তিন গুন ভাড়া হেঁকে বসে থাকে। প্রথমদিকে নানারকম ছাড় দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করেছিল এই দুই ক্যাব সংস্থা। আস্তে আস্তে অভ্যেসে বদলে গেল। ট্যাক্সি চালকরা একে একে নাম লেখালেন ওলা–উবেরে। তারপর ট্যাক্সির সেই বদরোগ এসে গেল এইসব ক্যাবেও। দ্বিদুন–তিনগুন ভাড়া হাঁকা যেমন আছে, তেমনি দরকারের সময় পাওয়াও যায় না। সরাসরি প্রত্যাখ্যান না হলেও ঘুরপথে প্রত্যাখ্যান চলছেই। কুড়ি মিনিট–পঁচিশ মিনিট অপেক্ষার পরেও গাড়ির দেখা নেই। একসময় হঠাৎ মেসেজ ঢুকে গেল, রাইড ক্যানসেল। অর্থাৎ, আবার নতুন করে অন্য গাড়ি বুকিং করুন।
কোনও যাত্রী যদি কোনও কারণে বুকিং ক্যানসেল করেন, তাহলে পরের রাইডের সময় তার ভাড়ার সঙ্গে আরও ৬০ টাকা যোগ হয়ে যায়। সেটা নাকি জরিমানা। যাত্রী বাতিল করলে যদি জরিমানা হয়, তাহলে চালক বাতিল করলে সেই জরিমানা তো যাত্রীরও পাওয়া উচিত। এবং এই দায় ওলা বা উবেরের নেওয়া উচিত। আমার ক্ষেত্রেও গত পাঁচ–ছ মাসে অন্তত দশবার এই বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। কুড়ি–পঁচিশ মিনিট অপেক্ষার পরেও চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হয়েছি। আমার মতো আরও অনেকেই হয়ত এই হয়রানির শিকার হয়েছেন। ওলার ওপর ভরসা করতে গিয়ে হয়ত ট্রেন মিস করেছেন। শুরুতে যে পেশাদারিত্ব দেখা গিয়েছিল, সেই পেশাদারিত্ব এখন অনেকটাই হারিয়ে গেছে। অনেক সময় চালক ফোন করে গন্তব্য জেনে নিচ্ছেন। তারপর যখন তখন রাইড ক্যানসেল করে দিচ্ছেন। এতে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় সেই যাত্রীকে। কোথায় নালিশ জানানো যায়, সেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা দরকার। যেন যাত্রীরা সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গায় অভিযোগ জানাতে পারেন।