পঙ্কজ চৌধুরি
এই রাজ্যে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট কি হবে? যত দিন গড়াচ্ছে, সেই সম্ভাবনা ক্রমশ কমে আসছে। মূলত দুটি আসনের জন্যই এই জোট প্রক্রিয়া ভেস্তে যেতে বসেছে। সেই দুটি হল রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ।
এই দুটি আসনই দাবি করছে কংগ্রেস। হ্যাঁ, গত লোকসভায় দুটি আসনেই অল্প ভোটে হেরেছিল কংগ্রেস। এটা যদি দাবি করার যুক্তি হয়, তাহলে যারা জিতেছিল, তাদের দাবিটা কি আরও জোরালো নয়? সিপিএম নিজেদের জেতা আসনের একটিও পাবে না। অথচ, কংগ্রেসকে চারটি জেতা আসনই ছাড়তে হবে। এমনকী, যে দুটি আসনে সিপিএমের কাছে হেরেছিল, সেই দুটি আসনও ছাড়তে হবে। দাবিটা একটু বেশিরকমের বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না?
সিপিএম নাকি দুর্বল হয়েছে। আর কংগ্রেস বুঝি দারুণ শক্তিশালী হয়েছে? বিধানসভা নির্বাচনে জোট করতে গিয়ে নিজেদের নানা সম্ভাবনাময় আসন ছেড়েছিল কংগ্রেসকে। যেখানে কংগ্রেসের জেতা তো দূরের কথা, তৃতীয় হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল না, সেখানে কংগ্রেসের বিধায়করা জিতেছেন। জিতেই অর্ধেকের বেশি যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। আরও কেউ কেউ যাওয়ার অপেক্ষায়। ২০২১ এর আগে আরও কেউ কেউ নিশ্চিতভাবেই নাম লেখাবেন তৃণমূল শিবিরে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে জেতানোর পর এমন প্রতিদান!
দু–দুবার রাজ্যসভা নির্বাচন হল। প্রথমবার প্রদীপ ভট্টাচার্য। জেতার জন্য তিনি দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের। অভিষেক মনু সিংভি। তাঁর নাম তো কংগ্রেস ঘোষণা করার আগে তৃণমূলই ঘোষণা করে দিল। এরপরেও কংগ্রেস আত্মসমীক্ষা করবে না? কংগ্রেস যদি একা লড়ে, অন্তত ৩৫ আসনে তৃতীয় হওয়াও মুশকিল। চতুর্থ স্থান পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। অথচ, তাঁরা একের পর এক আজগুবি বায়না করে চলেছেন।
অনেক হয়েছে, এবার সিপিএম নেতৃত্ব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলুন। কংগ্রেসকে অন্তত তাদের প্রকৃত শক্তি বুঝিয়ে দেওয়া দরকার। বারবার জোটের নামে কংগ্রেসকে এত তোষামোদের কোনও দরকার নেই। সিপিএম জিততে না পারুক, অন্তত অর্ধেকের বেশি আসনে দ্বিতীয় হবে। কংগ্রেসের থেকে অন্তত পাঁচগুণ ভোট পাবে। সেটা কংগ্রেস নেতৃত্বকে আরও ভাল করে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার।