মোক্ষম দিকেই আঙুল তুলেছেন সৌমিত্র

সুমিত চক্রবর্তী

তৃণমূলে সৌমিত্র খাঁর মেয়াদ আর কতদিন?‌ এখনই বলে দেওয়া যায়, খুব বেশি দিন নয়। এবার তিনি যে টিকিট পাচ্ছেন না, তা পরিষ্কার। আর টিকিট না পেলে, কোথায় যাবেন, সেটাও পরিষ্কার। ফলাফল কী হবে, তা নিয়েও তেমন ধোঁয়াশা নেই।

কিন্তু একটি মোক্ষম দিকে আলো ফেলেছেন সৌমিত্র খাঁ। বিষ্ণুপুরের এসডিপিও নাকি লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। হয় বিষ্ণুপুর নয়তো আরামবাগ, এই দুই সংরক্ষিত আসনের কোনও একটায় তিনি লড়তে চাইছেন। আর সেই কারণেই বর্তমান সাংসদ সৌমিত্রকে হেনস্থা করা হচ্ছে। সৌমিত্ররই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বাকিদের কী অবস্থা হতে পারে!‌ মাঝের স্তরের পুলিস কর্তারা কীভাবে কাজ করছেন, কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন, সেটা ফের পরিষ্কার হয়ে গেল। নেত্রীর সভায় লোক জমায়েত থেকে শুরু করে, বিরোধীদের মিথ্যে মামলা দেওয়া থেকে শুরু করে নানা ব্যাপারে এই অফিসারেরা অতি সক্রিয়।

soumitra khan4

একা বিষ্ণুপুরের এসডিপিও এই চেষ্টা করছেন, এমন নয়। খোঁজ নিলে জানা যাবে, আরও অনেক আমলাই মনে মনে এমন স্বপ্ন দেখেছেন। অনেকে ঠিকঠাক জায়গায় তদ্বিরও শুরু করে দিয়েছেন। তৃণমূল দলে অবসরপ্রাপ্ত আমলা বা বিচারকের অভাব নেই। অনেকেই জানেন, অবসরের পর নতুন একটা রাজনীতির ইনিংস শুরু করতে হলে তৃণমূল ভাল একটা প্ল্যাটফর্ম। অনেকে তো অবসর পর্যন্ত অপেক্ষাও করছেন না। আলিপুরদুয়ার থেকে জেমস কুজুর তো চাকরি থাকতে থাকতেই তৃণমূলে যোগ দিয়ে দিলেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা ভোটে দাঁড়াতে পারেন, এমনটা অনেকদিন ধরেই শোনা যায়। তাই এসডিপিও প্রার্থী হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

জেলার রাজনীতিতে অনেকদিন ধরেই সৌমিত্র বিশেষ পাত্তা পাচ্ছিলেন না। হঠাৎ করে বিধায়ক, তারপর দল বদলে হঠাৎ করে সাংসদ, মাথা ঘুরে যাওয়াই স্বাভাবিক। তেমন শিক্ষাদীক্ষা না থাকলে ধরাকে সরা জ্ঞান করাই স্বাভাবিক। একটা সময়ের পর নিজেকে আর সামলে রাখা যায় না। ক্ষোভটা বেরিয়েই পড়ে। সৌমিত্রর ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তিনি আসলে এসডিপিও–‌কে নয়, সোশ্যাল সাইটে দলেরও কাউকে কাউকে হুঙ্কার ঝাড়লেন। এবার যা যা হবে, হয়ত চিত্রনাট্য ধরেই হবে। বিজেপিতে যোগ দেওয়া এখন নিছকই সময়ের অপেক্ষা।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.