উপেক্ষা দিয়েই স্বাগত জানানো হোক ‘‌দ্য অ্যাক্সিডেটাল প্রাইম মিনিস্টার’‌কে

ধীমান সাহা

নতুন বছরের গোড়াতেই মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার। গত কয়েক বছর ধরেই ছবিটিকে ঘিরে প্রচুর মিডিয়া হাইপ তোলার চেষ্টা হয়েছে। কোনও কোনও শিবির এতটাই প্রচার করে দিয়েছেন যে, বিষয়বস্তু আর অজানা থাকছে না। মনমোহন সিং কতটা অযোগ্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, গান্ধী পরিবার কীভাবে তাঁর ওপর ছড়ি ঘোরাতো, ইত্যাদি ইত্যাদি।

বইটি লিখেছিলেন একসময় মনমোহন সিংয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা সঞ্জয় বারু। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন বইটি প্রকাশ করা হয়েছিল, সেটা সহজেই বোঝা যায়। সেই তাসটা এই নির্বাচনের আগেও প্রয়োগ করতে হবে। তাই তা থেকে তৈরি হল সিনেমা। আর মুক্তি পাচ্ছে ঠিক ভোটের আগেই।

manmohan

উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার, ভোটের আগে গান্ধী পরিবারকে আরও কিছুটা খাটো করে দেখানো। যে কাজটা প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। যে কোনও বিষয় নিয়ে তাঁকে বলতে বলুন, ঠিক নাম করে বা না করে গান্ধী পরিবারকে টেনে আনবেন। যদি বলেন শীত পড়েছে, উনি বলবেন নেহরুর আমলেও এত শীত পড়েনি। যদি ভূমিকম্প হয়, বলে বসতেই পারেন, কংগ্রেসের এত বছরের শাসনে ভূল ভূমি নীতির জন্যই ভূমিকম্প হচ্ছে।

এই ছবিটা দেখলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী খুব আনন্দ পাবেন, সন্দেহ নেই। আগেই হয়ত তাঁকে দেখানোও হয়েছে। কারণ, যাঁকে খুশি করার জন্য এই আয়োজন, তাঁকে দেখানোর লোভ সামলানো কঠিন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরকারি মঞ্চ, সব জায়গায় যখন নোঙরা প্রচারের ছড়াছড়ি, তখন বলিউডের মঞ্চই বাদ থাকে কেন?‌

accidentar pm

কোনও ছবির ভাল–‌মন্দ দিক নিয়ে সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু আমার কাছে এটা ছবি বলে মনে হচ্ছে না। লাগাতার যে নোঙরা প্রচারের প্রবাহ চলছে, এটা তারই একটা অঙ্গ বলেই মনে হচ্ছে। এই ছবিটা নিয়ে কংগ্রেস দেখছি নানা হুঙ্কার ছাড়ছে। এমনকি কেউ কেউ বলছেন মধ্যপ্রদেশে নিষিদ্ধ করা হবে। আমার মনে হয়, তার কোনও দরকার নেই। ছবিটা চলুক। যার যা বোঝার, ঠিক বুঝে নেবেন। আপত্তি করলেই আরও বেশি প্রচার পাবে। উপেক্ষাই সেরা অস্ত্র। সেই উপেক্ষা দিয়েই না হয় এই ছবিকে স্বাগত জানালাম।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.