মোবাইলে সব কথা কেমন ফুরিয়ে গেল!‌

বৃষ্টি চৌধুরি

কথা বলার ও কথা শোনার লোক সত্যিই বোধ হয় কমে গেল। অন্তত টেলিফোন কোম্পানিগুলির নানারকম অফার দেখে তাই মনে হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, মানুষ ঝুঁকছে ডেটার দিকে। কয়েক বছর আগেও নানারকম অফারের কথা শোনা যেত, এত টাকার রিচার্জ করলে ফুল টক টাইম পাবেন। এত টাকার রিচার্জ করলে এত মিনিট কথা বলতে পারবেন।

mobile talkingmobile surfing

এসব কথা আজকাল তেমন একটা শুনতে পাই না। সব বিজ্ঞাপন, পথচলতি মানুষের নানা সংলাপে ঘুরেফিরে আসছে ডেটার কথা। ফোর জি হলে এত ডেটা। অমুক তারিখ পর্যন্ত এত জিবি ডেটা ফ্রি। আগে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে লোককে কথা বলতে দেখা যেত। এখন কথা বলার দৃশ্য তেমন একটা দেখা যায় না। সবাই ঘাড় গুঁজে মোবাইলে কী যেন দেখে চলেছে। খুটখাট করে কী যেন লিখে চলেছে। কোনও সংস্থা সমীক্ষা করেছে কিনা জানি না। আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি যা দেখছি, তা হল মানুষ যদি দিন চার ঘণ্টা ফোন নিয়ে থাকেন, তার মধ্যে কথা বলেন হয়ত দশ–‌বারো মিনিট। বাকি সময়টা সারাক্ষণ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে মগ্ন। আসলে, কথা বলতে গেলে তো একজনের সঙ্গে বলতে হয়। কিন্তু এখানে একসঙ্গে অনেকের সঙ্গে আড্ডা চলতে থাকে। একসঙ্গে অনেক পুকুরে ছিপ ফেলা যায়। কোথায় কোন মাছ উঠবে, কে বলতে পারে!‌
প্রায় সব নেটওয়ার্কেই কথা বলার খরচ অনেক কমে গেছে। অনেকে তো চারশো বা পাঁচশো টাকায় আনলিমিটেড ফ্রি কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছে। কারণ, তাঁরা জানেন, অফুরন্ত কথা বলার ছাড় দিলেও এ আধঘণ্টার বেশি কথা বলবে না। অফিসে কাজের ফাঁকে টুকটাক মেসেজ চালানো যায়। কথা বলা তো মুশকিল। তাছাড়া, যার সঙ্গে কথা হবে, সে কেমন অবস্থায় থাকবে, কে জানে!‌ সে হয়ত ফোন ধরবেই না। আর কথা বলা ফ্রি জানলে কথার মূল্যও কমে যায়। যেতে বাধ্য। তাই যারা মোবাইল খুটখুট করে চলেছে, তাদের মেসেজ করার জন্য হয়ত অনেক লোক আছে। কিন্তু হায়!‌ তাঁদের সঙ্গে কথা বলার লোকের বড্ড অভাব।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *