বিপ্লব মিশ্র
বইমেলা কোথায়, তা নিয়ে এখনও সেভাবে বিতর্ক শুরু হয়নি। এরই মধ্যে নতুন ঠিকানা জানা গেল। এবার নাকি বইমেলা হবে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে। হঠাৎ এমন একটি জায়গা কেন বেছে নেওয়া হল, তা পরিষ্কার নয়। এটি কি সত্যিই গিল্ড কর্তাদের ভাবনা? নাকি এক্ষেত্রেও বিশেষ একজনের ‘অনুপ্রেরণা’ কাজ করেছে?
মিলন মেলা কেন বিখ্যাত? সেখানে সারাবছরই কিছু না কিছু হয়। কিন্তু সবচেয়ে বেশি পরিচিতি বইমেলার জন্যই। সারা বছর যত অনুষ্ঠানই হোক, সবমিলিয়ে যত লোক হয়, শুধু বইমেলাতেই তার থেকে ঢের বেশি মানুষের সমাগম হয়। সেখানে নাকি সংস্কার হবে। এই সময়েই সংস্কার করতে হল? বইমেলার পরে করা যেত না? বা, বইমেলার আগে সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে, এটা মাথায় রেখেও তো করা যেত। যেটা আসল অনুষ্ঠান, সেই সময়টাকেই বেছে নেওয়া হল সংস্কারের জন্য? কাদের বুদ্ধিতে এসব হচ্ছে, কে জানে?
সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক চত্বরেও শুনেছি শীতের সময় জুড়ে নানা মেলা লেগেই থাকে। কিন্তু সেইসব অবলা মেলা, সবলা মেলা আর বইমেলার মধ্যে আকাশ–পাতাল তফাত। ওই জায়গায় এত এত স্টলের জায়গা হবে? মানুষ ঘোরাফেরা করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাবেন তো? এত দূর থেকে এত এত মানুষ আসেন, তাঁরা ঠিকঠাক আসতে ও ফিরে যেতে পারবেন তো? করুণাময়ী যতই সল্টলেকের প্রাণকেন্দ্র হোক, কয়েক লক্ষ মানুষের ভিড়কে সামাল দেওয়ার মতো পরিকাঠামো সেখানে নেই। বাস দাঁড়ানোর জায়গা নেই। খুব বেশি অটোও দাঁড়াবে না। ওই ভিড় সামাল দেওয়া কতটা সম্ভব হবে, সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
আমার ধারনা, এটা সরকারেরই চাপিয়ে দেওয়া। গিল্ড কর্তারা হয় সমস্যাগুলো বোঝেননি। অথবা বুঝলেও মুখ ফুটে বলতে পারেননি। যদি তিনি রেগে যান! দুঃখের বিষয় হল, এমন সব মানুষেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, যাঁদের সেই বিষয়টা নিয়ে ধারনাই নেই। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিধাননগর কমিশনারেট বা বিধাননগর পুরনিগমের মতামত চাওয়া হয়েছিল? তাঁদের সুবিধা–অসুবিধার দিকটা জানতে চাওয়া হয়েছিল? মনে তো হয় না। তাঁরাও হয়ত কাগজ পড়েই জেনেছেন। চাপিয়ে দেওয়া একটা সিদ্ধান্ত, এই দুর্বল পরিকাঠামো নিয়ে কীভাবে উতরে দেবেন, তাঁরাই জানেন।
বইমেলা যেমন হয়, তেমনিই হবে। কাতারে কাতারে মানুষও আসবেন। ভোগান্তিও হবে। তখন অনেকি হাড়ে হাড়ে টের পাবেন। তিন মাস আগেই বেঙ্গল টাইমস মারফত এই সংশয় নথিবদ্ধ রাখলাম।
(এটি ওপেন ফোরামের লেখা। মতামত লেখকের ব্যক্তিগত। এই বিষয়ে আপনিও আপনার মতামত তুলে ধরতে পারেন। সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলার সুবিধা–অসুবিধা মেলে ধরতে পারেন। সিদ্ধান্তের প্রশংসা বা সমালোচনা করতে পারেন। মুক্তমনে নিজের মতামত মেলে ধরুন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা:
bengaltimes.in@gmail.com)