স্বরূপ গোস্বামী
আবার সেই বেছে নেওয়া হল প্রেস ক্লাবকে। কয়েকদিন আগের কথা। কোথাকার এক অর্বাচীন প্রেস ক্লাব ভাড়া করলেন। বললেন, সোনু নিগমের মাথার চুল কেটে তার গলায় জুতোর মালা পরিয়ে তাকে ঘোরাতে পারলে তিনি দশ লাখ টাকা দেবেন। সেই অর্বাচীন ভাড়া করেছিল প্রেস ক্লাবকে। ওই মঞ্চ থেকেই ফতোয়া জারি করলেন। এখানেই শেষ নয়, পরের দিন আবার প্রেস ক্লাব ভাড়া করলেন। আবার নতুন ফতোয়া জারি করলেন।
এবার ইমাম বরকতি। এই লোকটিও বেছে নিলেন প্রেস ক্লাবকে। এখান থেকে বলে দিলেন ‘আমি ভারত সরকারের আইন মানি না। আমি লালবাতি খুলব না। প্রধানমন্ত্রীও খোলাতে পারবেন না।’ এখানেই থেমে থাকলেন না। ধর্মের নামে একের পর এক উস্কানি দিয়ে গেলেন। বলা যায়, দাঙ্গার প্ররোচনা দিয়ে গেলেন।
এই বরকতির কাছ থেকে আমাদের তেমন প্রত্যাশা নেই। ইমাম হলেও তৃণমূলের মঞ্চে উঠে হুঙ্কার ঝাড়েন। ফতোয়া দেন, হুমকি দেন। এটাই যেন অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর মুখে সম্প্রীতির কথা শোনা গিয়েছে বলে মনে পড়ছে না। বরং, তিনি বললেই হিংসাকে উস্কে দেওয়া। এঁদের কাছে ভাল কিছুর প্রত্যাশা না করাই ভাল। কিন্তু আমার অভিযোগ প্রেস ক্লাবের বিরুদ্ধে। এই সব লোককে প্রেস ক্লাব কেন ভাড়া দেওয়া হয়? যাঁরা প্রেস ক্লাবকে ব্যবহার করে এভাবে হিংসা ছড়াবেন, প্রেস ক্লাব মাত্র কটা টাকার জন্য তাদের হল ছেড়ে দেবে? মনে রাখবেন, এঁরা যখন প্রেস কনফারেন্স করেন, তখন পেছনে প্রেস ক্লাবের লোগোটা দেখা যায়। অর্থাৎ এই হুমকি, এই ফতোয়ার সঙ্গে কলকাতা প্রেস ক্লাবের নামটাও জড়িয়ে যায়। যাঁরা প্রেস ক্লাব চালাচ্ছেন, তাঁদের এই বিষয়টা ভাবায় না? প্রেস ক্লাবের কোনও সদস্যের মনে হচ্ছে না যে, এইসব লোককে মঞ্চ ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত নয়? দিনের পর দিন প্রেস ক্লাব এইসব লোককে হল ভাড়া দিচ্ছে কেন? শুধু কটা টাকার জন্য ? নাকি অন্য কোনও চাপের কাছে নতিস্বীকার করতে হচ্ছে? নাকি এঁদের হল ভাড়া না দিলে কোনও একজন ক্ষেপে যাবেন?
প্রেস ক্লাব নিজেকে আর কোথায় নামাবে? রাজ্য প্রশাসন মেরুদন্ড নামক জিনিসটি অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছে। মিডিয়ার একটা বড় অংশও প্রায় জো হুজুর। কলকাতা প্রেস ক্লাবও নিজেদের এভাবে বিকিয়ে দেবে?