চিরকুমার
জুয়েল মিয়াজি
~
ইন্টারমিডিয়েটে পড়ার সময়ে আমাদের একটা ফ্রেন্ড সার্কেল ছিল। কী জানি নাম ছিল সার্কেলটার, এখন আর মনে নেই। কারণ কাহিনী অনেকদিন আগের। আমাদের সেই ফ্রেন্ড সার্কেলে রশিদ নামের একটা ছেলে ছিল। যাকে আমি রইস্যা বলে ডাকতাম। সে সবার বন্ধু ছিল, কিন্তু আমার একটু বেশি। এই সুবাদে তার সকল সুখ–দুঃখের গল্প আমি জানতাম।
রশিদ বড় লোক বন্ধুদের দেখে হিংসে করতো খুব। সব সময় বলতো ইস্স্! আমি যদি বড়লোক পিতার সন্তান হতে পারতাম। এই না পাওয়ার বেদনাটা তাকে সব সময় অসুখী করে রাখতো। তাই সব সময় নিজের বাপের নিন্দা করে বেড়াতো। হতাশা ভরা নিঃশ্বাস ফেলে বলতো, খোদা কেন যে আমাকে বড়লোকের ছেলে বানাইলো না। একদিন আত্মজিজ্ঞাসার ছলে রশিদ নিজেই বলে ফেলল, আচ্ছা আমার ছেলে কি বড় লোক বাপের সন্তান হতে পারবে? আমি হঠাৎ ওর মুখে এই ধরণের কথা শুনে থমকে যাই। কী বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না। তাই চুপ করে বসে থাকলাম কিছুক্ষণ। এরপর…….।
এরপর অনেক বছর কেটে গেছে। চলে গেছে অনেকগুলি বসন্ত,ভেঙে গেছে আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেল। সাবেক বন্ধুরা বুড়ো হয়ে গেছে, কেউ কেউ নানা নানিও হয়ে গেছেন। কিন্তু আমার গরিব বন্ধু রশিদ আজও বিয়ে করেনি।
(লেখক :জুয়েল মিয়াজি। ছাত্র, ফোকলোর বিভাগ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। ত্রিশাল, ময়মনসিংহ। jewelmiajee777@gmail.com )