মিডিয়া সমাচার। এই কলামে মিডিয়ার নানা আলোচনা। পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এবারের বিষয় সুমন চট্টোপাধ্যায়ের অমিত্রাক্ষর। জয়ললিতাকে ঘিরে প্রশস্তির ভিড়ে একটু হলেও অন্যরকম বিশ্লেষণ। তাই নিয়ে আলোকপাত করলেন ঈশ্বর গুপ্ত।
আমাদের দেশে মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে ভাল ভাল কথা বলার রেওয়াজ আছে। জীবিত অবস্থায় যতই শত্রুতা থাক, মৃত্যুর পর তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে হয়। মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে কোনও বিততর্ক থাকলে, তা এড়িয়ে যেতে হয়। এমনিতে এই প্রথাটা বেশ ভাল। যিনি আর কোনওদিন ফিরে আসবেন না, তাঁর সম্বন্ধে খারাপ কথা বলে কী লাভ? অন্তত কয়েকমাস সমালোচনা বন্ধ থাক। পরে না হয় আবার শুরু করা যাবে।
কিন্তু সাংবাদিকদের কাজই হল সত্যটা তুলে ধরা । কেউ মারা গেলেই সত্যটা মিথ্যে হয়ে যায় না। বিতর্ক শেষ হয়ে যায় না। কিন্তু আমাদের দেশের সাংবাদিকরা মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করেন।
এই অচলায়তনে ঘা মারলেন সুমন চট্টোপাধ্যায়। গত ৭ ডিসেম্বর এই সময় সংবাদপত্রে সুমন তাঁর ‘অমিত্রাক্ষর’ কলামে জয়ললিতা সম্পর্কে লিখেছেন। তামিলনাড়ুর সদ্যপ্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে ভাল ভাল কথা বললেও গদগদ প্রশংসার লাইনে তিনি যাননি। বরং শিরোনামেই একনায়কতন্ত্র এবং বেপরোয়া দুর্নীতির উল্লেখ করেছেন। তার থেকেও বড় কথা আছে কপির ভেতরে। তিনি লিখেছেন, যখন জয়ললিতা প্রথম রাজনীতিতে আসেন, তখন তাঁর যাবতীয় পরিচয় তিনি এম জি আরের প্রিয়পাত্রী (দুর্জনের কথায় রক্ষিতা)।
এই ব্র্যাকেটের ভেতরে থাকা বাক্যটি লিখতে দম লাগে। যে কোনও পরিস্থিতিতে সত্যি কথা বলার দম। জানি, সুমন চট্টোপাধ্যায় দোষে–গুণে মানুষ। তাঁর অনেক সমালোচনা শোনা যায়। ভ্যাটিকানে গিয়ে সবাই যখন গদগদ হয়ে ‘তুমি নির্মল করো, মঙ্গল করো’ তে গলা মেলাচ্ছেন, সেই ভিডিওতে একটু হলেও ব্যতিক্রমী মনে হয়েছিল এই সম্পাদককে। উঠে চলে যাননি, কিন্তু স্তাবকের মতো গলাও মেলাননি।