বনধ যে মানুষ চাইছে না, দেরিতে হলেও এই সহজ সত্যিটা বাম নেতৃত্ব বুঝলেন। কিন্তু সবাই বুঝলেন তো ? নাকি আবার নতুন কোনও সুযোগের অপেক্ষায় থাকলেন ? লিখেছেন সরল বিশ্বাস।।
কী বলবেন, ঠকে শেখা নাকি বিলম্বিত বোধোদয়? এই স্বীকারোক্তি নিয়ে অনেক বাঁকা কথা আসবে। আসুক। তবু এই ভুলস্বীকারকে ইতিবাচকভাবেই দেখতে চাই।
কিছু হলেই একটা বনধ ডেকে দাও। এটা যেন একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্তিত্ব জাহিরের এটাই যেন একটা মাধ্যম। আগে তৃণমূল ঘনঘন বনধ ডাকত। এখন সেই দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিয়েছে বামেরা। ভাবতে ভাল লাগছে, ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল অন্তত এই ব্যাপারে অনেকটা দায়িত্বশীল হয়েছে। তারা নিজেরাও আর বনধ ডাকে না, অন্য কেউ বনধ ডাকলে জনজীবনকে সচল রাখতে যা যা করা দরকার, তাই করে।
এবার বনধ ডেকে সত্যিই বেকায়দায় পড়েছিল বামেরা। কী দরকার ছিল এই বনধের ? সাধারণ মানুষের কথা তো ছেড়েই দিলাম। নিজের দলের কর্মীরাও এই বনধকে সমর্থন করেছেন বলে মনে হল না। গত কয়েকদিনে যতজন বামমনস্ক মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে, প্রত্যেকেই বলেছেন, বনধ ডেকে নিজেদের আরও হাস্যকর করে তুললাম। মানুষের কাছে দলের গ্রহণযোগ্যতা আরও কমে গেল।
গ্রাম বাংলার কর্মীরাও যে সহজ কথাটা বুঝতে পারেন, অনেক সময় আলিমুদ্দিনের কর্তারা তা বুঝতে পারেন না। দেওয়ালের লিখনটা পড়তেও পারেন না। একদিকে যখন মমতা ব্যানার্জি দিল্লি থেকে কলকাতার রাজপথ উত্তাল করছেন, তখন বামেরা সহজ পথটাকেই বেছে নিলেন। একটা বনধ ডেকে দাও। মানুষ দু হাত তুলে সমর্থন করবে।
বিবেকানন্দ বলেছিলেন, চালাকির দ্বারা কোনও মহৎ কাজ হয় না। এই কঠিন সময়েও শর্ট কার্ট প্রোসেসটাই খুঁজতে উঠেপড়ে লেগেছেন বাম নেতৃত্ব। মানুষের উপর নিয়ন্ত্রণ তো আগেই হারিয়েছে, এখন বোঝা যাচ্ছে মানুষের মনের খবরটাও রাখেন না এই নেতারা। ফলে, মানুষের ভালবাসা ফিরে আসার বদলে বিরক্তি বাড়ছে। একে তো তিক্ত অভিজ্ঞতার অভাব নেই। তারপর যখন মানুষ দেখে শোধরানোর চেষ্টাটুকুও নেই, তখন সেই বিরক্তি আরও বাড়ে। যাঁরা দলটা চালাচ্ছেন, এই সহজ সত্যিটাই তাঁরা বোঝেন না। বনধ যে মানুষ চাইছে না, দেরিতে হলেও এই সহজ সত্যিটা বাম নেতৃত্ব বুঝলেন। কিন্তু সবাই বুঝলেন তো ? নাকি আবার নতুন কোনও সুযোগের অপেক্ষায় থাকলেন ?


