তিস্তা ঘোষাল
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া।
আমাদের হয়েছে সেই অবস্থা। আমরা নিজের ঘরকেই ভাল করে চিনিনি। চেনার চেষ্টাও করিনি। পুজো আসছে। বাঙালি ব্যাগপত্তর গুছিয়ে বেরিয়ে পড়বে। কেউ ভিনদেশে, কেউ ভিনরাজ্যে। অথচ, নিজের রাজ্যেই কত ভাল ভাল জায়গা আছে। আমরা খোঁজই রাখি না।
আমার বাড়ি উত্তরবঙ্গে। সেখানেই জন্ম, সেখানেই বেড়ে ওঠা। কিন্তু এই বৈচিত্র্যপূর্ণ উত্তরবঙ্গের কতটুকুই বা জানি! মেয়েদের একটা মস্ত সমস্যা, ইচ্ছে থাকলেও উপায় হয় না। নানা বিধিনিষেধ এসে পড়ে। ভাবতে অবাক লাগে, আমার অনেক বন্ধুই উত্তরবঙ্গে প্রায় ঘোরেনি বললেই চলে। ঘরের কাছেই ডুয়ার্স। আমরা কজন গেছি? গেলেও হয়ত সারাজীবনে একবার বা দুবার। কাছেই পাহাড়। কত সুন্দর সুন্দর গ্রাম। হয়ত দার্জিলিং অনেকেই গেছেন, কিন্তু সেই গ্রামগুলো? অনেকেই যাননি।
সরকার উত্তরবঙ্গকে গুরুত্ব দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বারবার আসছেন। এটা অবশ্যই ভাল একটা উদ্যোগ। নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু সেগুলিকে জনপ্রিয় করতে আরও প্রচার দরকার। শুধু সরকারের নয়, আমাদেরও কিছুটা দায় আছে। আমরাও আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারি। সেটা কীভাবে ?
আমরা অনেকেই ফেসবুক, হোয়াটস আপ ব্যবহার করি। বাইরে বাইরে বন্ধুরা ছড়িয়ে আছেন। আমরা যদি নিজেদের প্রোফাইলে রোজ উত্তরবঙ্গের একটা করে সুন্দর ছবি পোস্ট করি, তাহলে তা অন্যান্য বন্ধুদেরও নজরে পড়বে। রোজ উত্তরবঙ্গের অজানা সব জায়গা দেখে তারাও আকৃষ্ট হতে পারেন। যিনি হয়ত দক্ষিণ ভারত যাবেন বলে ভাবছেন, তিনি উত্তরবঙ্গেও আসতে পারেন। এতে এইসব জায়গাগুলো আরও জনপ্রিয় হবে। কারণ, যাঁরা ঘুরে যাবেন, তাঁরা তাঁদের বন্ধুদের বলবেন। তাঁরাও সোশাল মিডিয়ায় প্রচার করবেন।
বিষয়টা ভেবে দেখতে পারেন। আমার বন্ধুদের অনুরোধ, আপনারাও নিজেদের ওয়ালে উত্তরবঙ্গকে তুলে ধরুন। অন্য কেউ ভাল ছবি পোট করলে নিজের ওয়ালে তা শেয়ার করুন। এইভাবেই আমরা একটু একটু করে এগিয়ে দিতে পারি আমাদের প্রিয় উত্তরবঙ্গকে।