মৌতান ঘোষাল
রূপোলী পর্দায় আবার ‘টেলিফোন’। নয়ের দশকে গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের এই অসাধারন গানের লাইন ‘কখন তোমার আসবে টেলিফোন’-ই পরিচালক অরিন্দম দের সদ্য মুক্তি পাওয়া ছবির নাম। অর্জুন চক্রবর্তী, ববি, স্নেহা মূল চরিত্রে নতুন প্রজন্মের এই তিন অভিনেতা। সঙ্গে একগুচ্ছ নতুন মুখ। ছবির গল্পের সূত্রপাত একটি ফোন-কলকে কেন্দ্র করে। ঘটনাচক্রে ছবিতে বারবারই ঘুরেফিরে আসে দূরভাষ। তাই টেলিফোনের কথা মাথায় রেখে ছবির নাম ঠিক করতে গেলে এই জনপ্রিয় কলির বাইরে আর কিছু কি মনে আসে? একই সঙ্গে এই রোম্যান্টিক কমেডিতে একটি ডিস্কথেকের সিকোয়েন্সে রয়েছে ‘কখন তোমার আসবে টেলিফোন’ লাইনটি। গানের বাকি কথা অবশ্য দৃশ্যের চাহিদা মেটাতে অন্যরকম। সব মিলিয়েই তাই ছবির এই নামকরণ।
নব্বই-এর দশকে ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র পুনর্জন্মের পর ৯৭ সালে প্রকাশ পায় অ্যালবাম ‘মায়া’। সেখানেই গৌতম চট্টপাধ্যায়ের এই অসাধারন সৃষ্টি। মণি দা’র বাউল আঙ্গিকের ‘ক্রিং রিং মধুর ধ্বনি’ তে আজও একই ভাবে আচ্ছন্ন বাঙালি। সেই জন্যই তো বারবার নতুন নতুন রূপে ফিরে আসা ‘টেলিফোন’এর। মোবাইল আর সোশাল মিডিয়ার ভুবনজোড়া আবেদনের মাঝেও তাই ফিকে হয়নি টেলিফোনের নস্টালজিয়া।
রূপলী পর্দায় এর আগেও এসেছে এই গান। ছবির নাম ‘নীল নির্জনে’। বাংলা ব্যান্ড ‘ক্যাক্টাস’ এর রক থেরাপির ছোঁয়ায় নতুন ভাবে পটার গলায় এই গান শুনেও মেতেছে বাংলা। তবে এবার একেবারে নাম ভূমিকায় ‘টেলিফোন’।
জনপ্রিয় গানের কলিকে ছবির নাম হিসাবে ব্যবহার করার রীতি ভারতীয় সিনেমায় নতুন নয়। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’, ‘পাপা কেহেতে হে’, ‘ না তুম জান না হাম’-এর মত একাধিক বলিউডি ছবি থেকে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’, ‘সেদিন দুজনে’-র মত বাংলা ছবি – সুমধুর গানের কলি বারবার সিনেমার নাম হয়ে ফিরে এসেছে রূপোলি পর্দায়। ‘কখন তোমার আসবে টেলিফোন’ এই ধারায় নবতম সংযোজন। শহুরে মাল্টিপ্লেক্সের পাশাপাশি জেলাতে কতখানি সাড়া পড়বে? রক কালচারে অভ্যস্থ নব্য যুবকরা না হয় দেখল। কিন্তু যৌবন পেরিয়ে আসা বা মাঝবয়সে থমকে দাঁড়ানো প্রজন্ম কি হলমুখী হবে? নানা প্রশ্ন, নানা সংশয়। এখন দেখার ৯০-এর দশকের এই সুপারহিট গানের লাইনের মিডাসটাচ পেয়ে হিট হয় কিনা ‘কখন তোমার আসবে টেলিফোন’।