সৌম্যজিৎ চৌধুরি
বলুন তো, কলকাতার মধ্যে কোথায় অমিতাভ বচ্চনের মূর্তি আছে? বলতে পারছেন না? আচ্ছা বেশ, শচীন তেন্ডুলকারের মূর্তি? এর জন্য কলকাতার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে চষে বেড়াতে হবে না। এই রোদে পুড়তেও হবে না। এক ছাদের তলাতেই পেয়ে যাবেন নানা জগতের দিকপালদের মূর্তি।
অনেকেই হয় যাননি। একবার ঘুরেই আসুন মাদারস ওয়াক্স মিউজিয়ামে। ইকো পার্কের ঠিক উল্টোদিকে। অর্থাৎ, রোদটা মিউজিয়ামে কাটিয়ে বিকেল নাগাদ ইকো পার্কে ঢুকে যেতেই পারেন। এক যাত্রায় দুই সফর হয়ে যাবে। সারি সারি মোমের মূর্তির মিছিল। আপনি চাইলে অনায়াসে রবীন্দ্রনাথের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে পারেন। অমিতাভ বচ্চনের পাশে ছবি তুলে অনেককে চমকে দিতেই পারেন। কে কে আছেন, সেই তালিকায়? তালিকাটা বেশ লম্বা। খেলার জগৎ দিয়েই শুরু করি। মেসি, মারাদোনার সঙ্গে আছেন কপিল, শচীন, সৌরভ, কোহলি। সিনেমার জগতে কাছাকাছি পেয়ে যাবেন অমিতাভ, মিঠুন, শাহরুখ, সলমনকে। বাংলা সিনেমার তারকা চাইলে সত্যজিৎ রায়, উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন। লেখকদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র। গান্ধীজি, নেতাজি, অরবিন্দের পাশএ বঙ্গবন্ধুও রয়েছেন স্বমহিমায়। গানের জগতে মান্না দে, হেমন্ত, কিশোর–লতা। রামকৃষ্ণ, সারদা, বিবেকানন্দও আছেন। যাঁর স্মৃতিতে এই মিউজিয়াম, সেই মাদার টেরেসাও রয়েছেন। আছেন এপিজে আব্দুল কালাম, প্রণব মুখার্জিও। বাস্তবের চরিত্র নিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছেন? মিস্টার বেন, বাঁটুল, মোটু পাতলু, ছোটা ভিমরাও আছে। বিভিন্ন তলায় এমন অনেক মূর্তির সারি। যার সঙ্গে খুশি, সেলফি তুলুন। তবে এত মূর্তির ভিড়ে কারও কারও মূর্তি না থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। যেমন, রবি ঠাকুর, শরৎচন্দ্র আছেন। সেখানে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের না থাকাটা কেমন যেন লাগে। শাহরুখ, সলমন যখন আছেন, তখন আরেক খান, অর্থাৎ আমির কোন যুক্তিতে নেই, বোঝা গেল না। উত্তম কুমার বা সুচিত্রার মূর্তি দেখে চেনার উপায় নেই। শচীন, কপিল বা সৌরভের মূর্তি দেখে চেনা যায় ঠিকই, তবে তাঁরা নিজেরা দেখলে নির্ঘাত রেগেই যেতেন। কলকাতার বুকে এমন মিউজিয়াম। আরেকজনের ছবি থাকতেই পারত— জ্যোতি বসু।