রক্তিম মিত্র
নিজের অপদার্থতাকে কীভাবে ঢাক পিটিয়ে প্রচার করতে হয়, তা নরেন্দ্র মোদিকে দেখেই শেখা উচিত। যতবার বাংলায় আসেন, ততবারই এই কাজটি করে যান। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না।
তিনি এসেছিলেন মেট্রো রেলের তিনটি রুটে নতুন ট্রেনের উদ্বোধন করতে। হাওড়া ও সেক্টর ফাইভের সংযোগ নিশ্চিতভাবে বড় সাফল্য। সেই সাফল্যের কথা বলতেই পারতেন। কিন্তু তাঁকে যে রাজনৈতিক ভাষণ দিতেই হবে। অতএব, সরকারি মঞ্চের পাশেই হল রাজনৈতিক মঞ্চ। যেখান থেকে তিনি রাজনৈতিক ভাষণ দেবেন।
যথারীতি তৃণমূলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ। যেগুলো প্রকারান্তরে নিজের বিরুদ্ধেই অভিযোগ। তাঁর দাবি, তৃণমূল সব জায়গায় দুর্নীতি করছে। টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রি করছে। ইত্যাদি ইত্যাদি। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কারা তদন্ত করছে? সিবিআই ও ইডি। তারা যে গত এক দশক ধরে এই সীমাহীন ব্যর্থতার নিদর্শন রেখে চলেছে, এই দায় কার? সেই কবে থেকে সারদা, কয়লা, গরু, বালি পাচারের তদন্ত হচ্ছে। মাঝে মাঝে লোক দেখানো দু একটা অ্যারেস্ট। একে একে সব জামিন পেয়ে যায়। আসল মাথায় ত্রিসীমানাতেও পৌঁছোতে পারে না সিবিআই। ছাব্বিশ হাজার শিক্ষকের চাকরি গেল। যোগ্য–অযোগ্য কেন আলাদা করা গেল না? রাজ্য সরকার মিশিয়ে দিয়ে জটিলতা পাকাবে, এ তো জানা কথাই। সিবিআই কী করল? তারা কেন সঠিক তালিকা খুঁজে বের করতে পারল না? সাদা চোখে যেটা দেখা যায়, সেটুকুও তারা চার্জশিটে লিখতে পারল না। এত বছর ধরে তদন্ত চলছে। বিচার প্রক্রিয়া শুরুই করা গেল না। এটা কার দায়? এত অপদার্থ সিবিআই আর দুর্নীতির প্রশ্নে এত অপদার্থ প্রধানমন্ত্রী কি এই ভারতবর্ষ আগে দেখেছে?
এটা কোনও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ? এই চেয়ারের মর্যাদাকে কতখানি নীচে নামাচ্ছেন, তিনি নিজেও জানেন না। কখনও ধর্মের নামে উস্কানি, কখনও নিম্নস্তরে ভাঁড়ামি, এগুলোই তাঁর অস্ত্র। তেমনই তাঁর ভক্তকূল। তাঁর হাতে দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্ব। অথচ, তিনিই বলছেন, সীমাহীন দুর্নীতি হচ্ছে। হ্যাঁ, এতকিছুর পরেও রাজ্য সরকার বেপরোয়া। কারণ, আসল মাথারা জানেন, আপনার দৌড় ওই ভাষণ দেওয়া। এর বেশি কিচ্ছু করার মুরোদ আপনার নেই। সেইদিন আর দূরে নেই, যেদিন বিজেপি কর্মীরাও এই প্রধানমন্ত্রীকে আস্ত বোঝাই মনে করবেন।
