দিকপালদের বিদায় এমন ম্যাড়মেড়ে কেন?‌

রজত সেনগুপ্ত

ভারতীয় ক্রিকেট শেষ ফেয়ারওয়েল টেস্ট কবে দেখেছিল?‌ সেই ওয়াংখেড়েতে, শচীন তেন্ডুলকারের বিদায়বেলায়। তার আগে সৌরভ গাঙ্গুলি, অনিল কুম্বলেরা বিদায়ী টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। আর কারও বিদায়টাই তেমন মধুর হয়নি।

সুনীল গাভাসকার মাথা উঁচু করেই বিদায় নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি অবসর ঘোষণা করেছিলেন, নিজের শেষ টেস্ট খেলে ফেলার অনেক পরে। অর্থাৎ, এটাই আমার বিদায়ী টেস্ট, এমন ঘোষণা করে বিদায়ী টেস্ট খেলেননি। কপিলদেবের অবসরও তেমন বর্ণময় হয়নি। তিনি এতদিন কেন খেলছেন, এই প্রশ্নই বরং বারবার তাড়া করেছে। দিলীপ বেঙ্গসরকার, রবি শাস্ত্রী, শ্রীকান্ত, আজহারউদ্দিনরা দেশকে নেতৃত্ব দিলেও আনুষ্ঠানিক অবসর নেওয়ার তেমন সুযোগ পাননি। তাঁদের আগে বাদ পড়তে হয়েছে। পরে যখন বুঝেছেন, আর ফেরা সম্ভব নয়, তখন হতাশ হয়ে অবসর নিয়েছেন।

পরের প্রজন্মে, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ, বীরেন্দ্র শেহবাগ, হরভজন সিংদের ট্র‌্যাকরেকর্ডও বেশ উজ্জ্বল। কিন্তু তাঁরাও বিদায়ী টেস্ট খেলার সুযোগ পেলেন কোথায়!‌ বাদ গিয়ে, হতাশ হয়ে অবসর নিতে হয়েছে। ধোনি ছেড়েছিলেন নিজের শর্তে। কিন্তু তিনিও অবসর ঘোষণার আগেই শেষ টেস্ট খেলে ফেলেছিলেন। ফলে, বিদায়ী টেস্টের অস্তরাগের আলো তাঁর গায়েও পড়েনি।

ধোনি পরবর্তী জমানার তিন দিকপাল রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি। তাঁদের বিদায়টাও কিছুটা যেন বর্ণহীন। অশ্বিনকে তো অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথেই ফিরে আসতে হল। রোহিতও হঠাৎ করেই অবসর নিয়ে বসলেন। বিরাটের সিদ্ধান্তও আচমকা। আরও দুজন, তাঁরাও একশো টেস্ট খেলেছেন। একজন ইশান্ত শর্মা, অন্যজন চেতেশ্বর পুজারা। ইশান্ত অবসর ঘোষণা করলেও পুজারা এখনও আনুষ্ঠানিক বিদায় জানাননি। আশায় আছেন, যদি ফেরার সুযোগ আসে। ঠিক যেমন অজিঙ্কা রাহানে। তিনিও একশোর কাছাকাছি টেস্ট খেলেছেন। কিন্তু আপাতত বৃত্তের বাইরে। তাঁর জন্যও কি দরজা খুলবে?‌

প্রশ্ন হল, এই দিকপালরা এত বছর ধরে দেশের হয়ে খেলেছেন। তাঁদের বিদায় এমন বর্ণহীন হবে কেন?‌ একবুক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে তাঁদের সরে দাঁড়াতে হবে কেন?‌ একটু সম্মানজনক বিদায় কি তাঁদের প্রাপ্য ছিল না?‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.