বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন
বিরাট কোহলিকে নিয়ে নাকি গণ উন্মাদনা। তিনি এত বছর পর রনজি ট্রফিতে খেলছেন। সেটা দেখতে নাকি কাতারে কাতারে ভিড় জমছে। যেন একটা গণ হিস্টিরিয়া তৈরি হয়েছে।
আচ্ছা, ঠিক কত লোক হয়েছিল? মেরেকেটে কুড়ি হাজার। আচ্ছা, আমাদের এখানে মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গলের কথা ছেড়ে দিন। মহমেডানের একটা মামুলি ম্যাচে কত দর্শক হয়! সংখ্যাটা নিশ্চিতভাবেই কুড়ি হাজারের বেশি। কই, সেই দর্শক সমাগম নিয়ে তো এত আদিখ্যেতা হয় না।
কোহলি এত বছর পর রনজি ট্রফিতে খেলছেন, সেটাকেও অদ্ভুতভাবে গ্লোরিফাই করা হচ্ছে। ভাবখানা এমন, কোহলি আবার রনজি ট্রফিতে কী খেলবেন! নেহাত ইচ্ছে হয়েছে, খেলে ধন্য করছেন। গাভাসকার, কপিলরা তারকা ছিলেন না। তাঁরা যেন দেশের হয়ে কিছুই খেলেননি। একা খেলছেন কোহলি। সৌরভ গাঙ্গুলি বা শচীন তেন্ডুলকাররা নেহাতই বোকা ছিলেন। তাই বাংলা বা মুম্বইয়ের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন। কোহলির অন্য স্ট্যান্ডার্ড। তিনি আবার ঘরোয়া ক্রিকেটে কী খেলবেন!
আচ্ছা, সত্যিই কি এত লোক শুধু কোহলির খেলা দেখতে এসেছিলেন? অন্য কেউ হলে বিশ্বাস করা যেত। কোহলি বলেই হয় না। যেদিন থেকে তিনি প্র্যাকটিসে নেমেছেন, সেদিন থেকেই একটা অদ্ভুত মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি চোখে পড়ছে। মিডিয়ার কাছে এটা একটা ইভেন্ট, সে না হয় বোঝা গেল। কিন্তু এই ইভেন্ট তৈরি করার পেছনে কি কোহলির মার্রকেটিং টিমের কোনও ভূমিকা নেই! যে সব গল্প ছড়ানো হচ্ছে, যেসব অ্যাঙ্গেল থেকে ছবি ছড়িয়ে তা ভাইরাল করা হচ্ছে, এর পেছনে শুধু স্বতস্ফূর্ততা নেই। আছে নিখুঁত এক পরিকল্পনা।
শোনা যায়, দিল্লি লোক জড়ো করার এজেন্সি আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেও তারা লোক সাপ্লাই দেয়। আজ যে লোকটা বিজেপির হয়ে স্লোগান দেবে, কালই অন্য মিছিলে তারা নিখুঁতভাবে কংগ্রেসের হয়েও স্লোগান দিতে পারে। তেমন পেশাদার কিছু লোককে ভিড়ের মাঝে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়নি তো! জানি, এখনই এমন সংশয় প্রকাশ করলে অনেকের বিশ্বাস করতে কষ্টই হবে। কিন্তু কেন জানি না, মনে হচ্ছে এর পেছনে সুচতুর কোনও প্যাকেজিং আছে। হয়ত বলাই ছিল, কোহলি যতক্ষণ উইকেটে থাকবেন, ততক্ষণ থাকতে হবে। আউট হয়ে গেলে আর থাকার দরকার নেই। হয়তো সেই কারণেই কোহলি আউট হতেই মাঠ ফাঁকা। অর্থাৎ, বুঝিয়ে দেওয়া যে, আমরা কোহলির ব্যাটিং দেখতেই এসেছিলাম।
বিরাট কোহলির কাছে সবকিছুই এক ইভেন্ট। চরম ব্যর্থতার সময়েও তিনি ক্যামেরায় পোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর সচেতন। কোন ছবিটা কখন ছাড়বেন, কোন ছবিতে কেমন লাইক পড়তে পারে, বিলক্ষণ বোঝেন। মেয়েদের প্রাইভেসি নিয়ে তিনি নাকি দারুণ চিন্তিত। কিন্তু শোনা যায়, মেয়ের ছবি প্রকাশ হবে না, এই মর্মেও তাঁর চুক্তি আছে। অর্থাৎ, মেয়ে তাঁর চুক্তিরই একটা অঙ্গ।
এই বিরাট কোহলির রনজি ম্যাচে এত এত লোক হল, অথচ এজেন্সির কোনও ভূমিকা নেই, এটা হতেই পারে না। আজ না হোক কাল, এই সত্যি ঠিক বেরিয়ে আসবে।
