সরল বিশ্বাস
আপনাকে ২ কেজি আলু কিনতে পাঠানো হল। বলা হল, দ্রুত সেই আলু নিয়ে আসতে হবে। আপনি ফিরে এলে তবে রান্না হবে।
আপনি বাজার গেলেন। গিয়েই দেখলেন, কোন কোন দোকানে আলু বিক্রি হচ্ছে। এই পর্যন্ত ঠিকই আছে। কারণ, আপনি ভাল জায়গা থেকেই আলু নেবেন।
কিন্তু দেখা গেল, আপনি দোকানদারদের ঠিকুজি কুষ্ঠি জোগাড় করছেন। কার কী নাম, কার কোথায় বাড়ি, বাড়িতে কে কে আছে? কত দূর লেখা পড়া করেছে। আগে কী ব্যবসা করত। কোন আড়ত থেকে মাল তোলে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
দেখলেন, কয়েকটা আলু একটু দাগ লাগা। একটু কালো স্পট। কেন এই স্পট হল, আপনি জানেন না। আপনার জানার কথাও নয়। আপনি ছুটলেন কষিবিজ্ঞানীর কাছে। সেই কৃষিবিজ্ঞানী বিস্তর বইপত্র খুলে আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, কেন দাগ লেগেছে। বললেন, পরের দিন আবার যেতে। আরও কয়েকটা বই ঘেঁটে তিনি আরও ভাল করে বলতে পারবেন, কোন কোন দেশের আলুতে এই দাগ পাওয়া যায়। পরের দিন আপনি আবার গেলেন। তিনি একগুচ্ছ বইপত্র মেলে ধরেছেন। আপনি আসার সময় সব বইপত্র সঙ্গে নিয়ে এলেন। আপনাকে আরও বিস্তর পড়াশোনা করতে হবে।
এবার আপনি গাড়ি হাঁকিয়ে গেলেন সেই দোকানির কাছে। সেখান থেকে গেলেন আড়তদারের কাছে। আড়তদার দিল কোল্ড স্টোরেজ মালিকের ঠিকানা। তাঁর কাছে আপনি আলু দেখিয়ে জানতে চাইলেন, এই আলু কোন চাষি রেখেছিল। কোল্ড স্টোরেজের মালিক বেচারা কী করে বলবেন। তিনি তালিকা ঘেঁটে জানালেন, কোন কোন চাষি আলু রেখেছিল। আপনি সব চাষিদের বাড়ি ধাওয়া করলেন। কোন চাষি কতদিন ধরে চাষ করছে, বাবা–কাকা চাষ করত কিনা, তার ছেলে চাষ করবে কিনা, খোঁজ নিলেন। সেই চাষি কোথায় সার কেনে, সারের কত দাম, কোন জমিতে কত সার ছড়ানো হয়েছে, এসব খোঁজ নেওয়া হল। আলু চাষ কীভাবে হয়, তার বিস্তারিত খোঁজ নিলেন। সম্ভব হলে সারের দোকানে ধাওয়া করলেন। সেখান থেকে সার সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান অর্জন করলেন।
এইসব করতে করতে কয়েক মাস লেগে গেল।
নিট ফল কী?
আপনাকে বলা হয়েছিল, ২ কেজি আলু আনতে। তার বদলে আপনি কত জায়গায় না চক্কর কাটলেন। তারপর রান্নার মাসিকে সেই আলু দেওয়ার বদলে আপনার বিস্তর গবেষণা ও কাগজপত্র জমা দিলেন। সেই রান্নার মাসি বেচারা কী করবেন, বুঝে উঠতেই পারছেন না।
আপনার নাম তাহলে কী দাঁড়াল?
উত্তর: সিবিআই