হরিশ মুখার্জি
এমন একটা গুরুতর অভিযোগ আসার পর পার্টি কী করতে পারত? যেটা করতে পারত, সেটাই করেছে। আপাতত তন্ময় ভট্টাচার্যকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
যে অভিযোগ উঠেছে, তা কি সত্যি? সত্যিই কি তন্ময় ভট্টাচার্য এমন আপত্তিকর আচরণ করেছেন? বলা মুশকিল। সেই মহিলার অভিযোগকে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। যদি সত্যি হয়, এই আচরণের নিন্দা করতেই হবে। তবে, শাসকদল যেভাবে সংগঠিত প্রচারে নেমে পড়েছে, তাতে কিছুটা হলেও সংশয় তৈরি হয়।
সরকার পক্ষ যেভাবে বিরোধীদের হেনস্থা করতে উঠে পড়ে লেগেছে, তাতে সরকার পক্ষের মুখপাত্ররা অভিযোগ করলেই সন্দেহ হয়। কারণ, সাম্প্রতিক অতীতে এত বেশি মিথ্যের বেসাতি করা হয়েছে, এঁরা সত্যি বলছেন, এটা ভাবতেও কষ্ট হয়।
একেবারে সাম্প্রতিক একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। মীনাক্ষী মুখার্জি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পোস্ট বলে একটি ভুয়ো পোস্ট নিয়ে প্রচার করা হল। মীনাক্ষী এত হাজার হাজার বক্তৃতা করেছেন। তাঁর বক্তব্যে কখনও ধর্মীয় উস্কানি মূলক এমন উপাদান পেয়েছেন? তিনি কখনও নিম্নরুচির আশ্রয় নিয়েছেন? তিনি ফেসবুকে এমন একটা ছবি পোস্ট করবেন, এটা পাগলেও বিশ্বাস করবে?
কিন্তু একদল অর্বাচীন সেই পোস্ট নিয়ে হইচই শুরু করে দিল। কেউ কেউ আবার অতি উৎসাহ নিয়ে থানায় এফআইআর করে দিল। মীনাক্ষীও যথাযথ তদন্ত দাবি করে সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানালেন। দুদিন পেরিয়ে গেল। ফল কী হল?
যে পুলিশ জঙ্গি ধরার মতো করে কলতান দাশগুপ্তকে ধরেছিল, দুদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সেই পুলিশ নীরব। কার ফোন থেকে বা ল্যাপটপ থেকে বা ডেস্কটপ থেকে এই পোস্ট হয়েছিল, সেটা যদি দুদিনেও খুঁজে বের করতে না পারে, তাহলে কীসের এই সাইবার ক্রাইম থানা? আসলে, পুলিশও জানে, এই তদন্ত করতে গেলে তৃণমূলের মুখোশই খুলে যাবে। নিশ্চিতভাবেই বেরিয়ে আসবে, মীনাক্ষীকে অপদস্থ করার জন্যই এই পোস্ট করা হয়েছে।
ঠিক সেই কারণেই তন্ময়বাবুর বিষয়টি নিয়েও সন্দেহ হচ্ছে। সেই মহিলা সাংবাদিকের অভিযোগের প্রতি এবং তাঁর প্রতিবাদের প্রতি সম্মান জানিয়েও বলতে হচ্ছে, তিনিও রাজনৈতিক পুতুল হয়ে গেলেন না তো? মীনাক্ষীর ব্যাপারে যে দুই মুখপাত্র সোচ্চার হয়েছিলেন, এক্ষেত্রেও তা্ঁদের অতি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। একটা বিকৃত প্রচার বুমেরাং হয়ে গেল, তাই অন্য কোনও বিকৃত প্রচারকে সামনে আনার নোঙরা উদ্দেশ্য নয় তো!
প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গেল।