সরল বিশ্বাস
দিন পনেরো আগের কথা। রাজারহাটে জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত গবেষণা কেন্দ্রের শিলান্যাস হয়ে গেল। সেই কেন্দ্রের শিলান্যাস করার কথা ছিল নীতীশ কুমারের। আসার কথা ছিল কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নেরও। অবশ্য, তাঁরা কেউই আসেননি।
পিনারাই বিজয়নকে নিয়ে প্রশ্ন ছিল না। এইমুহূর্তে তিনিই একমাত্র বামপন্থী মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আমন্ত্রিত হবেন, সেটা খুব স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু নীতীশ কুমারকে আনার এবং তাঁকে দিয়ে শিলান্যাস করানোর সিদ্ধান্তটা কারা নিয়েছিলেন! ভাগ্যিস তিনি আসেননি। নইলে, এই সিদ্ধান্ত কতটা ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়াত, ভেবে দেখেছেন!
বাম নেতৃত্ব বলতেই পারেন, নীতীশ যে এভাবে ডিগবাজি মারবেন, আগে থেকে তাঁরা কীভাবে জানবেন? নীতীশ কোথায় যাবেন, সেটা না হয় জানা ছিল না। কিন্তু নীতীশ এতবছর কোথায় ছিলেন, সেটা মাথায় রাখা হল না? এই নীতীশ কুমারের মুখ্যমন্ত্রীত্বের বেশিরভাগ সময়টাই তো কেটেছে বিজেপির জোটসঙ্গী হিসেবে। এমনকী, এবারেও তিনি ভোটে লড়েছিলেন বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেই। সেই তাঁকে কিনা ঘটা করে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল! কেন, দেশে নাম এত কম পড়িয়াছে?
ভিন রাজ্য থেকে বারবার ‘দলবদলু’দের ভাড়া করে না এনে বিমান বসুকে দিয়ে শিলান্যাস করানো যেত না? নিদেনপক্ষে মানিক সরকারকে দিয়েও করানো যেত। এমনকী সোনিয়া গান্ধী বা মনমোহন সিংকেও ডাকা যেতে পারত। তাই বলে নীতীশ কুমার! যদি সত্যিই তিনি আসতেন, ওই ফলকে জলজল করত তাঁর নামটা।
আর কেউ না বুঝুক, নীতীশ কুমার হয়তো বুঝেছিলেন, তাঁর নৌকো কোন শিবিরে ভিড়তে চলেছে। হয়তো সেই কারণে তিনি নিজেও আসতে চাননি। একদিক দিয়ে বিচক্ষণই বলতে হবে। অন্তত বামেদের বিড়ম্বনার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। অন্তত এই একটা কারণে তাঁকে ধন্যবাদ জানানোই যায়।