রক্তিম মিত্র
কালীঘাটের কাকুর ওপর রাগ হয় না।
এসএসকেএমের ডাক্তারদের ওপরও রাগ হয় না।
যত রাগ হয় ইডি–র ওপর। আগে বোধ হয় তাঁদেরই গ্রেপ্তার করা দরকার।
যে অপরাধী, সে প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করবে, সেটাই স্বাভাবিক। সেই লোকটা ধরা পড়লে যারা বিপদে পড়বে, তারা নানা টালবাহানা করবে, সেটাও স্বাভাবিক। এর কোনটা ইডি কর্তাদের অজানা! এরপরেও তদন্তের নামে যে টালবাহানা চলছে, এর জন্য ষোল আনা দায়ী ইডি অফিসাররাই।
এই তদন্তে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর ভয়েস স্যাম্পেল কতটা জরুরি, তা ইডি অফিসাররা জানতেন না! তাহলে যখন জেরা হল, যখন তিনি ইডি হেফাজতে ছিলেন, তখন সেই নমুনা নেওয়া হয়নি কেন? কেন তাঁকে জামাই আদরে এসএসকেএমে থাকার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হল?
তদন্ত থেকে বাঁচতে একের পর এক দুর্বৃত্ত আশ্রয় নিয়েছেন এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে। দূর থেকে দাঁড়িয়ে আঙুল চুষেছে সিবিআই, ইডি। এতবার কাঁচকলা দেখানো হচ্ছে। এত এত প্রমাণ লোপাট করা হচ্ছে। তারপরও ইডির নিজস্ব হেফাজত নেই কেন? কেন রাজ্যের জেলেই সবাইকে রাখা হচ্ছে! নিদেনপক্ষে ভিনরাজ্যে তো নিয়ে যাওয়া যেত। একবার রাজ্যের আতিথেয়তায় জেলে পাঠিয়ে দিলেই দায় শেষ! তারপর কবার জেরা হচ্ছে?
কালীঘাটের কাকুর ক্ষেত্রে এসএসকেএমের ডাক্তাররা নানা টালবাহান করছেন, তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার। এর জন্য কোনও গোয়েন্দা হওয়ার দরকার পড়ে না। সবাই বোঝে, বোঝেন না শুধু ওই আতাক্যালানে ইডি অফিসাররা।
প্রশ্ন হল, এসএসকেএমের ডাক্তাররা দিনের পর দিন ইডির তদন্তে অসহযোগিতা করার দুঃসাহস পাচ্ছেন কোথা থেকে? এর জন্য ইডি কর্তারাই দায়ী। তাঁদের দৌড় কতদূর, তাঁদের মুরোদ কত, তা ডাক্তাররা বেশ ভালমতোই জানেন। মাসের পর মাস নৌটঙ্কি চালিয়ে যাচ্ছেন, তারপরও ইডি কর্তারা কার্যত কিছুই করে উঠতে পারছেন না। হ্যাঁ, এই উপেক্ষা এই তাচ্ছিল্যই ইডির প্রাপ্য।
তাই কাকু নয়, ডাক্তাররাও নয়। এই ইডি কর্তাদেরই হেফাজতে নেওয়া দরকার। তদন্তের নামে প্রহসন ঢের হয়েছে। এবার এই ধ্যাস্টামো বন্ধ হোক।