স্নেহা সেন
পোস্টারে কৌশিক গাঙ্গুলির নাম বা ছবি মানে একটা অন্যরকম বার্তা। হ্যাঁ, এই ছবি দেখা যায়। যদি তিনি পরিচালনায় থাকেন, তাহলে তো যায়ই। এমনকী যদি অভিনয়ে থাকেন, তাও দেখা যায়।
কদিন ধরেই নানা প্রান্তে পোস্টার চোখে পড়ছে। এমনকী সোশ্যাল সাইটেও ঘোরাফেরা করছে। রাজনীতি। না, ঠিক পূর্ণাঙ্গ ছবি নয়। ওয়েব সিরিজ।
হইচইয়ের সাবস্ক্রিপশন নেওয়াই ছিল। ফলে, দেখতে বাধা ছিল না। কিন্তু ঠিক সময় করে উঠতে পারছিলাম না। অবশেষে, দেখা হল। কেমন লাগল? এককথায় বলা মুশিকল। আসলে, এই ছবি দেখে আপনি খুব উচ্ছ্বসিত হবেন, এমনও নয়। আবার ‘ধুর ছাই, দেখা যায় না’ বলে মুখও ফেরাবেন না।
রাজনীতি আসলে একটি পলিটিক্যাল থ্রিলার। রাজনীতি যত না আছে, খুন–রহস্য তার থেকে বেশি আছে। শুরুই হচ্ছে একটি দুর্ঘটনাকে ঘিরে। একটি ট্রাক এসে সজোরে ধাক্কা মারল একটি গাড়িকে। সেই গাড়িতে ছিলেন সাংসদের মেয়ে। সঙ্গে আরেকজন। সে কে? এই প্রশ্নটাই তাড়িয়ে বেড়াল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। কিনারা যদিওবা হল, বিস্তর ধোঁয়াশা থেকেও গেল।
এই সাংসদ কৌশিক গাঙ্গুলি। তাঁর আচার আচরণে এক স্নেহপরায়ণ বাবা যেমন আছেন, তেমনই আছেন এক ক্ষমতালোভী নেতা। যিনি তাঁর পথের কাঁটাগুলোকে সরিয়ে ফেলতে গিয়ে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। যিনি তাঁর মেয়েকে নিজের শূন্য আসনে বসাতে চান। আপাতভাবে তাঁকেই খলনায়ক মনে হতে পারে। কিন্তু যত জট খুলতে থাকে, দেখা যায় তিনি নেহাতই মামুলি। আসলে কলকাঠি নাড়ছে অন্যরা। কৌশিকের অভিনয়ে নানা অভিব্যক্তি বেশ বিশ্বাসযোগ্যভাবেই ধরা দিয়েছে। মেয়ের ভূমিকায় দিতিপ্রিয়াও বেশ নজরকাড়া। মেয়ের বন্ধু হিসেবে অর্জুন মানানসই।
তবে চিত্রনাট্যে হিন্দি ছবির আদল আনার চেষ্টা বাস্তব থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরিয়ে দিয়েছে। বাংলার রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে এই ছবি সেভাবে খাপ খায় না। তাছাড়া, ছবিতে দেখানো হয়েছে, গ্রামীণ এলাকার সাংসদ। স্বভাবতই গ্রামীণ জনজীবনও কিছুটা উঠে এসেছে। কিন্তু জেলায় একজন সাংসদের নির্বাচনী ক্ষেত্র কতটা বড় হয়, সে সম্পর্কে ধারণা থাকলে চিত্রনাট্য একটু বিশ্বাসযোগ্য হতে পারত। সাংসদের কাজের ক্ষেত্র কী, সে সম্পর্কেও কিছু ধারণা থাকা দরকার ছিল। কেন্দ্রীয় চরিত্রে একজন সাংসদ, ছবির নাম রাজনীতি, সেক্ষেত্রে আরও গভীরে যাওয়া দরকার ছিল। ভাসা ভাসা ধারণা নিয়ে এত ওপর থেকে না দেখলেই ভাল হত।