ধীমান সাহা
সেই কবে কবি লিখেছিলেন, শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা? শীতকাল এলে কবি কী করবেন? তিনি লম্বা শীতঘুমে যাবেন।
সিবিআইকে দেখে মাঝে মাঝে সেটাই মনে হয়। এই বাবুরা অবশ্য শীতকালের অপেক্ষা করেন না। যখন তখন শীতঘুমে চলে যান।
যেমন সারদা তদন্তের কথাই ধরা যাক। সাত বছরের বেশি সময় ধরে তদন্ত চলছে। এখনও সেই চলছেই। কবে নিষ্পত্তি হবে, কেউ জানে না। একের পর এক প্রমাণ লোপাট হয়ে গেল। কত লোক পৃথিবী ছেড়েই চলে গেলেন। কত লোকের স্মৃতি ফিকে হয়ে এল। কিন্তু তদন্ত সেই চলছেই।
তখন সুদীপ্ত সেন সবে ধরা পড়েছেন। দিন সাতেকের মধ্যেই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য ও প্রমাণ হাজির করলেন গৌতম দেব। তিনি তো আইপিএস ছিলেন না। তিনি তো সিবিআইয়ের গোয়েন্দা নন। তাঁর হাতে তো ফোন ট্যাপ করার বা কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চেক করার অধিকার নেই। তা সত্ত্বেও তিনি সাতদিনের মধ্যে এত তথ্য পেলেন। কিন্তু সিবিআই সাত বছরেও ততখানি এগোতে পারল না!
সম্প্রতি এসএসসি কাণ্ডেও যেন সেই একই অবস্থা। আজ ইনি গ্রেপ্তার হচ্ছেন। কাল উনি গ্রেপ্তার হচ্ছেন। অনেকে ভাবছেন, সিবিআই দারুণ সক্রিয়। এবার কিছু একটা হেস্তনেস্ত হবে। কিন্তু দেখতে দেখতে দু’মাস পেরিয়ে গেল। এখনও আসল পাণ্ডাদের নাম সামনেই আসছে না? যেটা সাতদিনে বের করা যেত, সেটা দু’মাসেও সিবিআই খুঁজে পাচ্ছে না? তাহলে, প্রথম দু–তিন দিনে এত তথ্য বেরিয়ে এল কীভাবে? যেটুকু হয়েছে, তার পেছনে সিবিআই–এর কৃতিত্ব যতখানি, জাস্টিস অভিজিৎ গাঙ্গুলির তৎপরতা তার থেকে ঢের বেশি। এমন একজন বিচারপতির কড়া নজরদারি না থাকলে সিবিআই কোন কালে ঘুমিয়ে পড়ত।
না, সিবিআই–এর দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। চাইলে তাঁরা সত্যিই অসাধ্যসাধন করতে পারেন। তাহলে, হাত গুটিয়ে বসে থাকেন কেন? লাটাই কার হাতে। কে সুতোয় টান মারেন? এই সহজ অঙ্কটা মেলানো কি সত্যিই কঠিন?
নানা সময়ে নানা বিষয়ে তদন্ত হয়। এবার সিবিআই তদন্ত কেন মাঝপথে থেমে যায়, তা নিয়ে বরং একটা তদন্ত হয়ে যাক।