কুণাল দাশগুপ্ত
গ্যালারিতে দর্শক থাকবে না। থাকবে না ইস্টবেঙ্গলের লাল–হলুদ ব্যানার, পতাকাও। তবু ঘরে ঘরে কিংবা পাড়ার মোড়ের জায়েন্ট স্ক্রিনের সামনে বাজবে সেই হারানো সুর। ‘চিমা-চিমা’ ধ্বনি। কয়েক দশক পর আবার।
পাগস্লের যুগ ছেড়ে দিলে নতুন করে কলকাতা ময়দানে বিদেশি ফুটবলার দের আসা যাওয়া শুরু হয় ১৯৭৮ সাল থেকে। নাইজেরীয় ডেভিড উইলিয়ামসের মাধ্যমে। তেমন একটা দাগ কাটতে পারেননি। পেরেছিলেন মজিদ। জামশিদও। কিন্তু মানুষের মনোজগতে হিল্লোল তুললেও গ্যালারিতে ‘মজিদ–মজিদ’ রব ওঠেনি। এটা শুরু হয়েছিল চিমা ওকোরি থেকে।
১৯৮৭ সালে চিমা মহমেডান থেকে ইস্টবেঙ্গলে আসেন। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে ওকোরি তখন চিমা থেকে কালো চিতা হয়েছেন। বিপক্ষের জালে থাবা বসানো রোজনামচা হয়ে গিয়েছে। তখন থেকেই গ্যালারিতে শোনা যেত ‘চিমা-চিমা’ ধ্বনি। সে ধ্বনি যেন জনপ্রিয়তায় ‘রূপ তেরা মস্তানা’কেও পিছনে ফেলে দিয়েছিল। চিমা দিয়ে শুরু, তারপর ‘শিশির-শিশির’ বা ‘বাইচুং-বাইচুং’ রব শোনা গিয়েছিল গ্যালারিতে। শেষ পর্যন্ত চিমা বাংলার ভালবাসায় পরিণত হয়েছিলেন।
ফিরে আসতে চলেছে সেই নস্টালজিক স্বর। হারানো সুর। চিমা–চিমা ধ্বনি। ২১এ ইস্টবেঙ্গল আইএসএল অভিযান শুরু করলেই শোনা যাবে রি-মেইক। এবার ড্যানিয়েল চিমা। নাইজেরিয় বক্স স্ট্রাইকার। চোখ ধাঁধানো অতীত। ২০১১, ১২, ১৪ সালে নরওয়ের মলডে এফসির হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। ২০১৩তে সর্বোচ্চ গোলদাতা। বলা হচ্ছে, এবারের আইএসএলের উপহার হতে চলেছেন নতুন চিমা। প্রতি ছোবলে বিষ ঢালবেন বিপক্ষের রক্ষণে। এমনটাই মনে করছেন তাঁর দলের ফুটবলাররা। অতএব ও হেনরির ‘সেই সুর’ আবার এই ভূখণ্ডে। আবার ‘চিমা-চিমা’ বৃন্দগান।
ভারতীয় ক্রিকেটে এমন একটা সুযোগ এসেছিল। সদানন্দ বিশ্বনাথ গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ হতে পারেননি। কিন্তু ড্যানিয়েল ওকোরি হতেই পারেন। রেকর্ডবুক তো তেমনটাই বলছে।