কাদের নিয়েছিলেন, এবার বুঝলেন তো বিজেপি নেতারা!‌

সম্রাট তপাদার

কত লোকের দম বন্ধ হয়ে আসছিল!‌ দলের মধ্যে তাঁরা নাকি নিশ্বাস নিতে পারছিলেন না। মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলেন না। তাই তাঁরা বিজেপিতে এলেন। এভাবেই কত তৃণমলের নেতার হাতে পতাকা ধরিয়ে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ অ্যান্ড কোং।

open forum3

কেউ যোগ দিয়েছেন জেলায়, কেউ রাজ্যে। আবার কেউ কেউ চার্টার্ড বিমানে উড়ে গিয়ে সোজা দিল্লিতে। আসলে, এঁরা ধরেই নিয়েছিলেন, রাজ্যে পরিবর্তন আসন্ন। বিজেপির আসা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। এই সুযোগে পদ্মফুলের পতাকা ধরে নিলেই হবে। কিন্তু এমনি এমনি তো জায়গা পাওয়া যাবে না। তাই ‘‌দমবন্ধ’ হয়ে আসার উপাখ্যান। ‌

তাঁদের অধিকাংশই টিকিট পেলেন। সবমিলিয়ে বিজেপির তালিকায় প্রাক্তন তৃণমূলীর সংখ্যাটা অর্ধেকেরও বেশি। এলাকার মানুষ যাঁদের তৃণমূল নেতা হিসেবে চিনতেন, তাঁরা হুট করে দাঁড়িয়ে পড়লেন বিজেপির টিকিটে। ভেবেছিলেন, অনায়াসেই উতরে যাবেন। কিন্তু এমন চপেটাঘাত হবে, ভাবতেও পারেননি।

এখন কী আর করা যায়!‌ আগামী পাঁচ বছর তো তৃণমূলই ক্ষমতায়। ফলে, যেভাবেই হোক, আবার পুরনো দলে ফিরতে হবে। একেক জনের কায়দা একেক রকম। কেউ ফেসবুকে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিচ্ছেন। কেউ তৃণমূল নেতাদের আবার ফোন করা শুরু করেছেন। কেউ বিজেপি–‌কে গালমন্দ করে একটু প্রচারে থাকতে চাইছেন। কেউ কেউ সম্পর্ক ছিন্ন করে বার্তা দিতে চাইছেন। মোদ্দা কথা, আবার ফিরিয়ে নিতে হবে। বিধানসভার টিকিট পাইনি তো কী হয়েছে, সামনে পুরভোট তো আছে। নইলে বিভিন্ন ভুলভাল কমিটি তো আছে। কোথাও একটা ঢুকে পড়তে হবে। আর কিছু না হোক, এলাকার মানুষ তো বুঝবে অমুকবাবু আবার তৃণমূল। তাহলেই হল। তাহলেই ওসি থেকে বিডিও সবাইকে চমকানো যাবে। নিশ্চিন্তে তোলাবাজি করা যাবে।

তাই আবার বেসুরো বাজা শুরু। যাঁরা হেরেছেন, তাঁরা তো ইট পেতেই রেখেছেন। যাঁরা জিতেছেন, তাঁরাও তলে তলে যোগাযোগ রাখলেন। কোনও একটা বাহানায় যদি শাসকের ছাতার তলায় আসা যায়!‌ বিজেপির যে নেতারা পাইকারি হারে তৃণমূলীদের হাতে পতাকা তুলে দিয়েছিলেন, তাঁদের শিক্ষা হল তো?‌ এবার তাঁরা বুঝলেন তো, কাদের দলে নিয়েছিলেন!‌

(‌এটি ওপেন ফোরামের লেখা। বেঙ্গল টাইমসে ওপেন ফোরাম হল পাঠকের মুক্তমঞ্চ। এখানে পাঠকের মতামতকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। )‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *