বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন : লতা মঙ্গেশকারের ফাংশান। ধরা যাক, হুকুম জারি হল, ফাংশানের পর তাঁকে প্রেস কনফারেন্স করতে হবে। না করলে তাঁকে গাইতে দেওয়া হবে না।
সত্যিই যদি এমন শর্ত আরোপ করা হত, তিনি হয়ত কবেই গান গাওয়া ছেড়ে দিতেন।
বা, অমিতাভ বচ্চনকে বলা হল, প্রতিদিন শুটিংয়ের শেষে তঁাকে সাংবাদিক সম্মেলন করতে হবে। সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। তিনিও নিশ্চিতভাবেই বিরক্ত হতেন।
বা ধরুন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী। গত সাত বছরে যিনি একটিও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হননি। তাঁকে তো সাত বছরে একবারও মিডিয়া সেন্টারে বসানো গেল না।
তাহলে, খামোখা ওসাকা কী দোষ করলেন?
তাঁর কাজ টেনিস খেলা। খেলার শেষে ব্যাখ্যা দেওয়া নয়। কেউ কেউ যদি মনে করেন, খেলার পর বিস্তারিত ভাষণ দেবেন, তিনি দিতেই পারেন। তাঁকে তো কেউ আটকাচ্ছে না। ওসাকার যদি মনে হয়, আমার খেলাটাই আমার পরিচয়। লিখতে হলে, আমি কেমন খেললাম, সেটা লিখুন। কী বললাম, কোন বিষয়ে কী ভাবছি, সেটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি মন দেব বিপক্ষের শটটাকে ফোরহ্যান্ড বা ব্যাকহ্যান্ডে কীভাবে ফেরাব, তাই নিয়ে। নেটের কাছে গিয়ে কীভাবে হাফভলি বা প্লেসিং করব, তাই নিয়ে। কোন সবজান্তা সাংবাদিক কী প্রশ্ন করবে, তা নিয়ে এত ভাবতে যাব কেন? তা নিয়ে এত হোমওয়ার্কই বা করতে যাব কেন? কোন প্রশ্নের কোন উত্তরে কী ব্যাখ্যা হল, তা নিয়ে কী বিতর্ক তৈরি হল, এসব ভাবতে আমার বয়েই গেছে।
কেউ যদি এমনটা ভাবেন, তাতে অন্যায় কোথায়? কেউ হ্যাংলার মতো যত খুশি ছবি তুলছেন, সোশ্যাল সাইটে সাঁটাচ্ছেন। সেটা যদি কারও অধিকার হয়, তাহলে প্রচারের আড়ালে থাকাটাও একজনের অধিকারের মধ্যেই পড়ে।
তিনিও তো বলতে পারেন, আমাকে যদি আধঘণ্টা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হয়, তাহলে সাবাদিককেও আগে আধঘণ্টা কোর্টে আমার মুখোমুখি হতে হবে। আমার সঙ্গে খেলতে হবে।
মানছি, বিভিন্ন টুর্নামেন্টের নিয়মে বলা থাকে, প্রেস মিট করতে হবে। কিন্তু সময় এসেছে সেই নিয়ম বদলানোর। যিনি মুখোমুখি হতে চাইছেন, তিনি হোন। কিন্তু যিনি মুখোমুখি হতে চাইছেন না, তাঁকে অন্তত রেহাই দেওয়া হোক।