কুণাল দাশগুপ্ত
ঢাক ঢোল পিটিয়ে নিজের অক্ষমতার কথাই প্রচার করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। করোনার কারণে চলতি বছর কেন্দ্রীয় দুটি বোর্ড তাদের দশম শ্রেণির পরীক্ষা বাতিল করেছে। সিবিএসই আর আইসিএসই–র একাদশ শ্রেণির ক্লাসও শুরু হয়ে গেছে। কোভিডের জন্য পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নির্দিষ্ট সময় মাধ্যমিক পরীক্ষা নিতে পারেনি।
মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছাত্র-ছাত্রী এবং অবিভাবকরা তাকিয়ে ছিলেন সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে। শিক্ষামন্ত্রী জানালেন, আপাতত পরীক্ষা বাতিল হচ্ছে না। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাগ্যিস বললেন! এতবড় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যে মন্ত্রীর নেই, এ আর কী এমন নতুন কথা! তিনি বলেছেন, করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। এটা কমে গেলেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। এবং পরীক্ষা হয়তো হোম সেন্টারে না হয়ে আগের মতোই হবে। প্রশ্ন হল, সংক্রমণের গ্রাফ যে নিম্নমুখী, তা বোঝা গেল কীভাবে? এখানে তো টেস্টই প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। গ্রামগঞ্জে যাঁদের করোনার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তাঁদের কজনের টেস্ট হচ্ছে! হাসপাতাল এতটাই দূরে, অনেকে আসছেনই না। বাড়িতেই হয়ত সেরে যাচ্ছে। জানতেও পারছেন না।
জুলাই মাসে যদি পরীক্ষা হয়, তাহলে ভ্যাকসিন না পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে অভিভাবকরা নিয়ে যাবেন কীসের ভরসায়? তাছাড়া জুলাইয়ে যদি পরীক্ষা হয়, তবে ফল প্রকাশ হবে কবে? এরপর যখন একাদশের ক্লাস শুরু হবে, আইসিএসই আর সিবিএসই’র তুলনায় পিছিয়ে পড়বে না এই রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা? আরও একটা বিষয় আছে, মাধ্যমিকের স্কুল থেকে যে সব ছাত্র-ছাত্রী ওই দুই বোর্ডের স্কুলগুলোতে ভর্তি হয়েছে তারা এখন মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নেবে নাকি নতুন বোর্ডের একাদশ শ্রেণির পড়া করবে? এই সব প্রশ্ন কিন্তু উঠতে শুরু করেছে। অভিভাবকদের একটা বড় অংশ চাইছেন পরীক্ষা বাতিল হোক। তাহলে কীসের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হবে এই প্রশ্নও উঠে আসছে। ঘটনা হল, এর উত্তর সরকার আর পর্ষদকেই খুঁজে বের করতে হবে। কোনও ভাবেই ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য আর ভবিষ্যতের সামনে প্রশ্নচিহ্ন নিয়ে আসা যাবে না। আইসিএসই, সিবিএসই যা পারে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ তা পারে না কেন?