রঞ্জন পাত্র
সিবিআইকে যত দেখি, ততই হাসি পায়। কখনও রাগও লাগে। ভোটের সময় আবার যেন শীতঘুম ভেঙে হঠাৎ করে জেগে উঠেছে। আজ একে ডাকছে। কাল তাকে ডাকছে।
বারবার জানতে ইচ্ছে করে, এই তৎপরতা এতদিন কোথায় ছিল? কোন পথ দিয়ে কয়লা পাচার হয়, সেই টাকা কোন পথ দিয়ে আসে, কোথায় যায়, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জানে। সিবিআই বাবুরা যেন এতদিনে জানতে পারল। গত পাঁচ ছ মাস ধরে কাগজে বেরোচ্ছে, অমুককে ডাকবে সিবিআই। অমুককে জেরা করবে সিবিআই। এসব জানার পরেও সেইসব কীর্তিমানরা যেন সব প্রমাণ রেখে দেবেন।
মোদ্দা কথা, প্রমাণ লোপাট করার জন্য পর্যাপ্ত সময় সিবিআই দিয়েছে। এরপরেও হয়ত কিছু থেকে যাবে। কিন্তু তাতে সিবিআইয়ের কৃতিত্ব কোথায়? তদন্তে নেমে যতখানি অপদার্থতা দেখানো সম্ভব, সব সিবিআই দেখিয়ে ফেলেছে। এখন ভোটের আগে একে–তাকে ডাকার তোড়জোড়। জনতার কাছে কার্যত এই বার্তাই যাচ্ছে, ভোটের আগে বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে। রাজ্যের শাসক দল এটাই প্রচার করছে। আর মানুষের কাছে তা বিশ্বাসযোগ্যও হচ্ছে। কিছু করার নেই। সিবিআই নিজেকে এই জায়গাতেই নামিয়ে এনেছে। তারা বছরের পর বছর বুঝিয়ে দিয়েছে তারা কতটা অপদার্থ হতে পারে।
যারা কয়লা বা গরু পাচারে যুক্ত, অবশ্যই তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। কিন্তু তদন্তের নামে বছরের পর যারা ঘুমিয়ে রইল, তাদের সাজা হবে না? আমার তো মনে হয়, আগে এই সিবিআই কর্তাদের বিচার হোক। কার নির্দেশে তারা এতদিন ঘুমিয়ে ছিলেন, কার নির্দেশে আবার জেগে উঠছেন, সেই তদন্ত হওয়াও জরুরি। পাচারের সেই বখরা কোনও কোনও সিবিআই কর্তার কাছেও যায় কিনা, তদন্তের আওতা থেকে সেটাই বা বাদ থাকে কেন?