হেমন্ত রায়
শুভেন্দু বিজেপিতে এলে কী হবে? বিজেপির পালে আরও হাওয়া লাগবে, সেটা জানাই ছিল। জেলায় জেলায় সেই ছবিই দেখা যাচ্ছে। শুভেন্দু একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন। রাজ্য রাজনীতির তরজা ক্রমশ জমে উঠছে।
তবে, নন্দীগ্রামে মমতার ঘোষণা অনেকটাই মাস্টারস্ট্রোক। নন্দীগ্রামকে নিজের খাসতালুক বলেই দাবি করে আসছেন শুভেন্দু। সেই খাসতালুকে এসে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিলেন, তিনিই এখানে প্রার্থী হচ্ছেন।
নিঃসন্দেহে সাহসী এক সিদ্ধান্ত। এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামে দাঁড়ানো সাতের দশকে বিনা হেলমেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হওয়ার মতোই। ভবানীপুর থেকে পালিয়ে গেলেন, এমনটা যাঁরা বলছেন, তাঁরা নিজেরাই নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর হাজারটা কাজের সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত আর যাই হোক ভয়ের নয়, বরং সাহসেরই পরিচয়।
এ যাত্রায় শুভেন্দু কিন্তু পিছিয়ে গেলেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে নিজের নাম ঘোষণা করতেই পারতেন। দলকে বলতেই পারতেন, আমি এই চ্যালেঞ্জ নিতে চাই। তাই নন্দীগ্রামে এখন থেকেই আমার নাম ঘোষণা করা হোক। আশা করি, দল আপত্তি করত না। তার বদলে কী ঘটল? শুভেন্দু বলে বসলেন, যিনিই প্রার্থী হোন, মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চাশ হাজার ভোটে হারবেন। কিন্তু সাহস করে বলতে পারলেন না, আমিই প্রার্থী হব।
বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে বোঝা যাচ্ছে, শুভেন্দু হয়ত নন্দীগ্রামকে এড়িয়েই যাবেন। হয় ভোটেই দাঁড়াবেন না। নইলে, দাঁড়ালেও অন্য কোনও নিরাপদ কেন্দ্র খুঁজবেন। যিনি নিজের কেন্দ্র ছেড়ে অন্য কেন্দ্র খোঁজেন, তাঁর হুঙ্কারে মানুষ বিশ্বাস করবে কেন? শুভেন্দু, চ্যালেঞ্জ আপনার দরজায় এসে হাজির হয়েছিল। আর আপনি কিনা খিড়কির দরজা কোনদিকে, তার খোঁজ করছেন।
অন্তত এ যাত্রায় মমতা অনেকটাই এগিয়ে গেলেন।