বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: দার্জিলিং ম্যালে আবার ধুমধাম করে হবে নেতাজির জন্মদিন পালন। গত কয়েকদিন ধরে পোস্টারে, হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গেছে দার্জিলিঙের নানা এলাকা। ম্যালে যেভাবে পোস্টারের ফোয়ারা, কার্যত দৃশ্যদূষণই বলা যায়। সেই পোস্টারে উদ্বোধক হিসেবে মমতা ব্যানার্জির নাম বেশ বড় পয়েন্টে। অন্যদিকে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম অনেক ছোট পয়েন্টে।
এটা এই রাজ্যে নতুন কিছু নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই নেতাজির জন্মদিন পালনে মমতার ছবি বড়, নেতাজির ছবি ছোট। কার জন্মদিন, সেটা বড় কথা নয়। কে মালা দিচ্ছেন, সেটাই বড় কথা। জেলায় জেলায় নেতাজির জন্মদিন পালনে এরকম ছবিই দেখা যায়। এবারও দেখা যাবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় টিপ্পনি চলবে। মূলস্রোত মিডিয়া যথারীতি নীরব থাকবে।
ব্লক স্তরের কোনও অত্যুৎসাহী নেতা এমনটা করতেই পারেন। তাঁকে নম্বর বাড়াতে হবে। আর এসব করলে তৃণমূলে নম্বর বাড়েও। আসলে, তিনি চান বলেই এই জাতীয় কান্ড কারখানা হয়। পরিষ্কার বলা যাক, তিনি না চাইলে হত না। তিনি কে, সেটা যাঁরা বোঝার, বুঝে নিন।
একটা অন্যরকম ছবি ধরা পড়ল পূর্ব মেদিনীপুরে। সেখানে নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে আগে থেকেই তোরণ সাজানো হয়েছিল। নেতাজির পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর ছবিও টাঙানো হয়েছিল। স্থানীয় নেতাকে খুশি করতে কেউ হয়ত করে থাকবেন। খবরটা কানে যায় শুভেন্দুর। যিনি এমন কাণ্ডটি করেছেন, তাঁকে ধমক দিয়েছেন, এমনটাই শোনা যায়। নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রুত যেন তাঁর ছবি খুলে নেওয়া হয়। তোরণে শুধুমাত্র নেতাজির ছবিই থাকবে।
নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ। নেতাকে খুশি করতে এমন নানা কাণ্ড হয়। কিন্তু যাঁরে খুশি করার জন্য এই নির্লজ্জ স্তাবকতা, তিনি কড়া বার্তা দিলে এসব থেমে যায়। আশা করি, সামনের বছর ওই উদ্যোক্তারা আর এমন ধৃষ্টতা দেখাবেন না। এমনকী অন্যান্য উদ্যোক্তারাও এই জাতীয় কাণ্ড করার আগে দুবার ভাববেন।
শুভেন্দুর মনে হয়েছিল, নেতাজির ছবির পাশে তাঁর ছবি বেমানান। হয়ত অসভ্যতাও। তাই তিনি খুলে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কারও কারও মনে হয়, তিনি নেতাজির থেকে কম কীসের? তিনি হয়ত নেতাজির থেকেও জনপ্রিয়। তাই তাঁর ছবি নেতাজির থেকেও বড় হয়ে যায়।
শুভেন্দু শুধু উদ্যোক্তাদের বার্তা দেননি। সেই বার্তা হয়ত আরও কাউকে কাউকে দিতে চাইলেন।