প্রসূন মিত্র
স্বাধীনতার পর থেকে এমন পরিস্থিতি কখনও আসেনি। এই রাজ্য থেকে বামেদের কোনও সাংসদ নেই। লোকসভায় নেই। রাজ্যসভায় থেকেও নেই। কারণ, ঋতব্রত ব্যানার্জি কাগজে–কলমে এখনও সাংসদ থাকলেও দল তাঁকে আগেই বহিষ্কার করেছে। ফলে, লোকসভা ও রাজ্যসভায় এই রাজ্য থেকে বামেদের কোনও প্রতিনিধি নেই।
এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? আর কোনও দ্বিধা নয়। সব জড়তা ভেঙে, সব ছুৎমার্গ বিষর্জন দিয়ে এখনই চূড়ান্ত করা হোক সীতারাম ইয়েচুরির নাম। বাম–কং জোট হওয়ার পর থেকে দুবার রাজ্যসভা ভোট হয়েছে। দুবারই বামেদের সামনে রাজ্যসভায় কাউকে পাঠানোর সুযোগ এসেছিল। অন্তত কংগ্রেসের দিক থেকে তেমন জোরালো দাবি ছিল না। বামেরা আসন চাইলে রাজ্য কংগ্রেস ছেড়ে দিতে রাজিই ছিল। প্রথমবার প্রার্থী হওয়ার জন্য কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য তো সরাসরি ফোন করে বসলেন মমতা ব্যানার্দিকে। আর দ্বিতীয়বার অভিষেক মনু সিংভির নাম তো ঘোষণাই করলেন মমতা ব্যানার্জি। কংগ্রেসের প্রার্থী, কিন্তু তাঁকেও চূড়ান্ত করতে হচ্ছে মমতা ব্যানার্জির সবুজ সংকেত নিয়ে। রাজ্য কং নেতৃত্ব নিশ্চয় এমন অসহায় আত্মসমর্পণ চান না।
লোকসভা ভোটের পর ফের জোটের আবহ। এই পরিস্থিতিতে সীতারাম ইয়েচুরির নাম চূড়ান্ত করা হলে রাজ্য, বা দিল্লি কোনওদিক থেকেই আপত্তি আসবে না। কংগ্রেসের সমর্থন নেব কী নেব না, আশা করি এই নিয়ে আর কোনও গোঁয়ার্তুমি দেখাবেন না প্রকাশ কারাত অ্যান্ড কোং। অহেতুক ঝুলিয়ে না রেখে এখনই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হোক। তারপর যেখানে যেখানে কথা বলা দরকার, কথা বলা হোক। নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর যেন অহেতুক জটিলতা না তৈরি হয়। নইলে কিন্তু আবার মমতা ব্যানার্জি নিজের পছন্দের প্রার্থীকে চাপিয়ে দেবেন। এবারও যদি বাস মিস হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে, রাজনৈতিক বিচক্ষণতা কিচ্ছু নেই।