বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: সরকার কতটা মাইনে বাড়াবে? অপেক্ষায় ছিলেন সরকারি কর্মীরা। বিরাট এক ঘোষণা। কাগজে ঢাউস করে ছাপা হল, আড়াই গুনের বেশি। বাস্তবটা কী, সরকারি কর্মীরা ভালভাবেই জানেন।
যাঁর বেসিক সাত হাজার, তাঁর মাইনে নাকি হবে সতেরো হাজার টাকা। অর্থাৎ, আড়াই গুন। আর এটাই ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। কিন্তু যাঁর বেসিক সাত হাজার, এখন তিনি কত পান? অঙ্কটা প্রায় ষোল হাজারের কাছাকাছি। অর্থাৎ, ছিল ষোল হাজার, হবে সতেরো হাজারের একটু বেশি। মানে, এক হাজারের মতো। আড়াই গুন কীভাবে হল?
থাক সে সব কথা। বেতন কমিশনের মেয়াদ বারবার বাড়িয়ে যাওয়া হল। এতদিনে নাকি প্রথম দফার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। কী আশ্চর্য, যেদিন দলের সংগঠনের ছাতার তলায় থাকা সরকারি কর্মীদের ডাকা হল, সেদিনই রিপোর্ট জমা পড়ল! আর সেদিন দুপুরেই কিনা ঘোষণা হয়ে গেল। রিপোর্ট বিধানসভায় জমা পড়ল না। ক্যাবিনেটেও আলোচনা হল না। দুম করে ঘোষণা হয়ে গেল। সরকার মাইনে বাড়াতেই পারে। তাই বলে সেই ঘোষণা দলীয় সভায় কেন করতে হল? এটা নবান্ন থেকে ঘোষণা করা যেত না!
বাম আমলেও নানা সময়ে মাইনে বেড়েছে। ডি এ বেড়েছে। কখনও দলীয় সভা থেকে সেসব ঘোষণা হয়েছে? এমনকী, জ্যোতি বসু বা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও সেগুলো ঘোষণা করেননি। কখনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। কখনও অসীম দাশগুপ্ত রাইটার্স থেকে প্রেস ব্রিফিং করেছেন। এভাবে ঢাক পিটিয়ে দলীয় সভা থেকে ঘোষণা করতে হয়নি।
আসলে, কোনটা দলীয় সভায় বলতে হয়, কোনটা সরকারি জায়গা থেকে বলতে হয়, এই সাধারণ নিয়মগুলো মাঝে মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর গুলিয়ে যায়। তাই তৃণমূল সভাপতিদের ডেকে আনা হয় নবান্নে। অন্য দল থেকে কেউ তৃণমূলে যোগ দিলে, সেই যোগদান পর্ব হয় নবান্নে। অথচ, মাইনে বাড়ার ঘোষণা, যেটা নবান্ন থেকে হওয়ার কথা, সেটা হয় দলীয় সভায়।
কী বলবেন, জেদ না মূর্খামি? যেটাই হোক, কোনওটাই সুলক্ষণ নয়। কিন্তু এরপরেও ধন্য ধন্য রব ওঠে মিডিয়ায়। মূলস্রোত মিডিয়াও এইসব বোধ বুদ্ধি অনেক আগেই জলাঞ্জলি দিয়েছে। কেন দলীয় সভা থেকে মাইনে বৃদ্ধির ঘোষণা হল, এই প্রশ্নটাও করা যাবে না।