বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: অনেকদিন ধরেই শোনা যেত কথাটা— বাঘ নেই বক্সায়। কথাটা যেন প্রবাদের চেহারা নিয়েছিল। বাঘসুমারির পর দেখা গেল, সত্যিই বক্সায় বাঘের অস্তিত্ব পাওয়া গেল না। অন্তত বাঘসুমারি থেকে তেমন কোনও তথ্য উঠে এল না।
একদিকে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। সারা দেশেও আগের তুলনায় সংখ্যাটা বেড়েছে। কিন্তু বক্সা টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টে কোনও বাঘের হদিশ পাওয়া গেল না। শুধু বক্সা নয়, উত্তরবঙ্গের কোনও জঙ্গল থেকেই বাঘের অস্তিত্বের কোনও প্রমাণ পাওয়া গেল না।
পায়ের ছাপ, মল মূত্রের নমুনা, টিভি ক্যামেরার ফুটেজ–সহ আরও নানা নমুনার ওপর ভিত্তি করে বাঘ গণনা হয়েছিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে। যদিও বনকর্তাদের কেউ কেউ মনে করছেন, এত স্বল্প সময়ের বাঘসুমারিতে সঠিক চিত্র উঠে আসার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া, বিশাল জঙ্গলের সামান্য এলাকা নিয়ে এই সমীক্ষা হয়।
যদিও উল্টো মতও আছে। পাল্টা যুক্তি, গণনা না হয় অল্প দিনের জন্য হয়। কিন্তু বনদপ্তরের পাতা কয়েকশো সিসি টিভি ক্যামেরা জঙ্গলের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় বসানো আছে। সেসব ক্যামেরাতে তো কোনও কোনও মুহূর্তের ছবি উঠবে। কিন্তু তাও তো পাওয়া যায়নি। সত্যিই বাঘ থাকলে, গত কয়েক বছরে একটি ছবিও কি ধরা পড়ত না? তাছাড়া, বাঘ থাকলে মানুষ বা গবাদি পশু নিখোঁজ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটত। গত কয়েক বছরে পশুদের দেহাংশ পড়ে থাকতেও দেখা যায়নি।
কিন্তু কয়েকদিন আগে ন্যাওড়াভ্যালিতে বাঘ দেখা গেছে। ক্যামেরায় সেই ছবি বন্দিও করা হয়েছে। কারও কারও মনে, ওটি ন্যাওড়াভ্যালির বাঘ নয়। ভুটানের পাহাড়ে কিছু বাঘ আছে। খাদ্যের সন্ধানে হয়ত তাদেরই কেউ কেউ এক দুবার ডুয়ার্সে এসেছিল। এগুলি স্থায়ীভাবে থাকলে আরও অনেকেই দেখতে পেতেন।
তবে বাঘগণনার এই রিপোর্টের পর ‘বাঘ নেই বক্সায়’ এই জল্পনা আরও বেড়েছে।
1 comment
আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা টাইগার রিজার্ভ পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই জঙ্গল শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, বরং এখানে রয়েছে অবিশ্বাস্য বন্যপ্রাণী ঘনত্ব ও বৈচিত্র্য, যা এটিকে প্রকৃতি প্রেমীদের স্বর্গে পরিণত করেছে।
বক্সার জঙ্গল প্রায় ৭৬০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এখানে দেখা মেলে এশিয়ান হাতি, চিতল, বাইসন, লেপার্ড, বার্কিং ডিয়ার, হরিণ, এমনকি মাঝে মাঝে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের উপস্থিতিও লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে বর্ষাকাল ও শীতকালে এই অঞ্চলে প্রাণীদের গতিবিধি বেশি চোখে পড়ে, কারণ এই সময় জল এবং খাদ্যের প্রাচুর্য থাকে। read more