বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: এবার তাঁর ইচ্ছে হল, জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে বসবেন। না, তাঁদের কোনও মতামত নেওয়ার জন্য নয়। তাঁদের উদ্দেশে নিদান দেওয়ার জন্য। বৈঠক হল নবান্নে।
আসলে, নবান্ন আর দলীয় অফিসের মধ্যে তফাতটা মাঝে মাঝেই গুলিয়ে যায়। কোন মিটিংটা কোথায় হওয়া উচিত, মুখ্যমন্ত্রী বোধ হয় আজও বুঝে উঠতে পারেননি। দলীয় সভায় সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়। আবার সরকারি সভায় দলীয় সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়।
সভা যখন নবান্নে, তখন ধরে নেওয়াই যায়, এটা সরকারি সভা। তাহলে তো অন্য দলের জেলা পরিষদ সদস্যদেরও ডাকার কথা। কই, তাঁদের তো ডাকা হল না।
সেই সভায় মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবরা ছিলেন। থাকতেই পারেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর পাশের চেয়ারেই দেখা গেল তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে। এই সভায় তাঁর ভূমিকা ঠিক কী? বরং, এই সভায় পঞ্চায়েত মন্ত্রীর থাকার কথা। তার বদলে দলের রাজ্য সভাপতি! এইভাবে সরকারি সভায় দলের রাজ্য সভাপতিকে ডাকা যায়! নেত্রী চাইলে সব যায়। সুব্রত মুখার্জির বদলে সুব্রত বক্সি! এত বড় বিভ্রাট!
জেলা পরিষদ সভাধিপতি, সহকারী সভাধিপতি, কর্মাধ্যক্ষ, সদস্যদের ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা হল। এটা অবশ্য সরকারের এক্তিয়ারের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু সেখানে বলা হল, পঞ্চায়েত স্তরে কে কে টিকিট পাবেন, তা নাকি এবার থেকে জেলা পরিষদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সরকারি মিটিং, এখানে টিকিট পাওয়ার প্রসঙ্গ আসছে কীভাবে?
মলয় দে বা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো আমলাদের কী করুণ অবস্থা। এসব দলীয় নিদান তাঁদের সরকারি মিটিংয়ে শুনতে হচ্ছে। জেলা পরিষদ সদস্যদেরও কী করুণ অবস্থা। রাজ্য সরকারের সচিবালয় থেকে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী দলীয় নির্দেশ দিয়ে চলেছেন। এই যদি অনুপ্রেরণার নমুনা হয়, তা জেলায় জেলায় প্রয়োগ হবেই।