বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: একেবারে বিচারপতিকেই বয়কট! তাও আবার সরকারি আইনজীবীরা! হ্যাঁ, এমন দৃশ্যও দেখল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সমাপ্তি চ্যাটার্জির এজলাস বয়কট করলেন সরকারি আইনজীবীরা। তাঁর অপরাধ? বনগাঁ পুরসভার অনাস্থা মামলায় পুরপ্রধানকে ভর্ৎসনা করেছিলেন।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা। অথচ, বিরোধী কাউন্সিরররা পুরসভায় ঢুকতেই পারলেন না। পুলিশই কিনা তাঁদের আটকে দিল। দুই কাউন্সিলরকে বলা হল, এফআইআর আছে, ভোট দেওয়া যাবে না। এফআইআর থাকলে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দেওয়া যাবে না, এ আবার কেমন নিয়ম! যাঁরা অনাস্থা আনলেন, তাঁরা এলেন না, এটা বিশ্বাসযোগ্য?
সেই প্রশ্নটাই তুলেছিলেন বিচারপতি। বনগাঁ পুরসভায় অনাস্থাকে ঘিরে কী কী ঘটেছে, তা টিভির সুবাদে সবাই দেখেছেন। গোটা ছবিটা জলের মতো পরিষ্কার। তারপরেও রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল তাঁদের হয়ে সওয়াল করছেন। ভাবতেই অবাক লাগে। রাজ্য সরকারের উকিলরা কিনা পুরপ্রধানের হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন।
বিচারপতির রায় পছন্দ না হতেই পারে। তাই বলে, তাঁর এজলাস বয়কট! তাও কিনা সরকারি আইনজীবীরা! নানা বিতর্ক, নানা মতামত উঠে আসছে। কিন্তু আসল প্রশ্নটাই উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।
একজন বিচারপতির এজলাস বয়কট, এটা কি সরকারি আইনজীবীদের সিদ্ধান্ত! এতবড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার কি তাঁদের আছে ? এমনকী অ্যাডভোকেট জেনারেলেরও আছে ? এতবড় সিদ্ধান্ত রাজ্যের আইনমন্ত্রী নিতে পারেন? বিশ্বাস করা মুশকিল। একটা সাধারণ সিদ্ধান্ত নিতে যাঁদের হাঁটু কাঁপে, তাঁরা নেবেন এমন সিদ্ধান্ত ? হতেই পারে না।
অর্থাৎ, এই সিদ্ধান্তের পেছনে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ থাকাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। সর্বোচ্চ পর্যায় না বলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী বলাই ভাল। তাঁর নির্দেশ ছাড়া এতবড় সিদ্ধান্ত হতে পারে! যদি তাঁর সিদ্ধান্ত না হয়ে থাকে, যদি তাঁর সায় না থেকে থাকে, তাহলে এতক্ষণ অ্যাডভোকেট জেনারেল নিজের পদে থাকতে পারতেন? দেশের রেলমন্ত্রীকে সরাতে একদিন লাগে না। সেখানে কে অ্যাডভোকেট জেনারেল!