নিছক নোটিশ বাতিল নয়, কারা প্রশাসন চালাচ্ছেন, সেটাই বুঝিয়ে দিলেন বিকাশ

সরল বিশ্বাস

‌অনাস্থায় কী হত?‌ নিশ্চিতভাবেই সব্যসাচী দত্ত হারতেন। তবে কয়েকটা ক্রস ভোটিং হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ৩৫ জন তাঁর বিরুদ্ধে সই করেছিলেন। কিন্তু গোপন ব্যালটে ভোট হলে হয়ত দেখা যেত, এঁদের মধ্যে থেকে গোটা পাঁচেক ভোট তাঁর দিকেও পড়ে যেতে পারত। সেটা বুঝতে পেরে তিনি আগাম সরে গেলেন।

সেটা বড় কথা নয়। সব্যসাচী দাবি করে আসছিলেন, এই অনাস্থার নোটিশ অবৈধ। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন। সেই আইনজীবী কে, সেটাও জানা গেল। হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, অনাস্থা নোটিশ অবৈধ। পুর কমিশনার এই নোটিশ দিতে পারেন না। চেয়ারম্যানকে এই নোটিশ দিতে হবে।

bikash ranjan3

এটুকু অন্তত বোঝা গেল, পুর প্রশাসন চালানোর জন্য যে ন্যূনতম আইনটুকু জানা দরকার, সেটাও অনেকে জানেন না। চেয়ারম্যান জানতেন না। যে ৩৫ জন কাউন্সিলর সই করলেন, তাঁরা জানতেন না (‌জানলে নিশ্চয় সঠিক পরামর্শ দিতেন)‌। দফায় দফায় নাকি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা হয়েছে। কীভাবে অনাস্থা আনা হবে, তা নিয়ে রীতিমতো ক্লাস হয়েছে। ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশ মতোই প্রতিটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পুর কমিশনার যে নোটিশ পাঠাচ্ছেন, মিডিয়া মারফত সারা বাংলা জানে। আশা করা যায়, পুরমন্ত্রীও জানতেন।

অর্থাৎ, পুরনিগমে অনাস্থা আনার সঠিক নিয়ম কী, এই সহজ ব্যাপারটা পুরমন্ত্রীও জানতেন না। কিন্তু আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য অন্তত এটুকু বুঝিয়ে দিলেন, যাঁরা প্রশাসন চালাচ্ছেন, তাঁরা সাধারণ নিয়মগুলোই জানেন না। তাই এটা কিন্তু নিছক নোটিশ বাতিলের রায় নয়। নিছক অনাস্থা ভোট দুদিন পিছিয়ে দেওয়ার রায় নয়। রাজ্য প্রশাসন কারা চালাচ্ছেন, তাঁদের আইনের জ্ঞান কতটুকু, সেটা বেআব্রু করার রায়। যাঁর যা বোঝার, বুঝে নিন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.