উত্তম জানা
আবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে বাংলা। রাজ্যের নতুন নাম কী হবে, তা নিয়ে দু দশক ধরে চলছে বিতর্ক। দু’দশক পরেও তা ঝুলেই রইল। নিষ্পত্তি আর হচ্ছে না। অথচ, রাজ্যের নাম নিয়ে বিরাট কোনও বিতর্কের আবহ ছিল না।
২০০১ সালেই বাংলা নামের প্রস্তাব আনা হয়েছিল বিধানসভায়। সর্বসম্মতিতেই তা পাশ হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র পাওয়া যায়নি। নানা অছিলায় ঝুলিয়ে রাকা হয়েছিল। ২০০৪ এ মনমোহন সরকার আসার পরেও কেন্দ্রের অবস্থান একইরকম ছিল। ২০১১ তে রাজ্যে মমতার সরকার আসার পর ঠিক হল, নাম হবে ইংরাজিতে ওয়েস্ট বেঙ্গলের বদলে হবে পশ্চিমবঙ্গ। সেই প্রস্তাব গেল। সেটাও ঝুলে রইল। পরে আবার বিল এল। তিনটি নাম পাঠানো হল— বাংলা, বঙ্গাল, বেঙ্গল। তিন ভাষায় তিন নাম! বিরোধীরা আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু সেই আপত্তিকে ধর্তব্যের মধ্যে আনা হয়নি। কেন্দ্র তিনটি আলাদা নামে সায় দেয়নি। পরে আবার শুধু ‘বাংলা’ নামে প্রস্তাব আনা হয়। সেটিও সর্বসম্মতিতে পাশ হয়। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, সেটিও নাকি কেন্দ্রের বিবেচনাধীন নেই। এর জন্য নাকি সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
অহেতুক গড়িমসি ছাড়া কিছুই নয়। যখন কেন্দ্র জানাল, একসঙ্গে তিনটি নাম রাখা যাবে না, তখন তো বাংলা নাম নিয়ে আপত্তি ওঠেনি। তাহলে এখন বাংলা নামে আপত্তির কারণ কী? যদি এই শব্দটা নিয়ে আপত্তি থাকে, তাহলে রাজ্যকে খোলামেলা আলোচনায় তা জানানো যেতেই পারত। এমন তো নয় যে, রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে মমতা ব্যানার্জির বাক্যালাপ ছিল না। আসলে, সমস্ত স্তরেই সমন্বয়ের অভাব। যেটা মুখোমুখি আলোচনায় পাঁচ মিনিটে মিটে যেতে পারত, তা নিয়ে চিঠিচাপাটি চলছে। ফলে, দূরত্ব আরও বাড়ছে।
আর বিলম্ব কাম্য নয়। অন্যান্য রাজ্যের নামও পরিবর্তন হয়েছে। তখন তো সংবিধান সংশোধন করতে হয়নি। তাহলে, হঠাৎ পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সংবিধান বদলের প্রসঙ্গ আসছে কেন? যদি করতেও হয়, তাহলে সংসদের এই অধিবেশনেই করা হোক। অহেতুক এই চিঠি চাচাচালি না করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যা মেটান।
(ওপেন ফোরাম। বেঙ্গল টাইমসের জনপ্রিয় বিভাগ। নানা বিষয় নিয়ে এখানে খোলামেলা আলোচনা হয়। নানা মত উঠে আসতে পারে। মতামতের দায় একান্তই লেখকের। এই ব্যাপারে আপনিও আপনার মতামত তুলে ধরতে পারেন। ৩০০ শব্দের মধ্যে আপনার মতামত পাঠিয়ে দিন বেঙ্গল টাইমসের ঠিকানায়। ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com )