সরল বিশ্বাস
তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় সেরা চমক কে? অনেকেই বলবেন, মিমি ও নুসরত। কিন্তু আমার মতে, এবারের সেরা বাজি হতে চলেছেন মহুয়া মৈত্র।
করিমপুরের বিধায়ককে প্রার্থী করা হয়েছে কৃষ্ণনগর থেকে। এই কেন্দ্রে তিনি জিতবেন কিনা বলা মুশকিল। বিজেপির একটা চোরা হাওয়া থাকবে। তবে এগিয়ে মহুয়াই। মিমি–নুসরত–দেবরাও হয়ত জিতবেন। কিন্তু তাতে বাংলার গৌরব বাড়বে না। একা মহুয়া যা করে দেখাতে পারেন, তাঁর কাছে বাকি সবাইকে ম্লান মনে হতে পারে।
লোকসভায় একসময় মাথা উঁচু করে থাকতেন বাংলার সাংসদরা। হীরেণ মুখার্জি, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, ত্রিদিব চৌধুরি, সোমনাথ চ্যাটার্জি, জ্যোতির্ময় বসু, প্রণব মুখার্জি, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, ইন্দ্রজিৎ গুপ্তরা এই বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেখানে এখন প্রতিনিধি সন্ধ্যা রায়, দেব, শতাব্দী রায়, মুনমুন সেন, তাপস পালরা। তৃণমূলের যে ৩৪ জন জিতেছিলেন, তাঁদের মধ্যে হাতে গোনা চার–পাঁচজন ছাড়া কারও সাংসদ হওয়ার যোগ্যতাই নেই। পাঁচ বছর ধরে তাঁরা সেটাই প্রমাণ করে গেছেন। এবারও তাঁরাই সংখ্যায় ভারী।
তার মাঝে অনেকটাই ব্যতিক্রম এবার মহুয়া মৈত্র। জিতবেন কিনা বলা মুশকিল। হয়ত এমন দেখা গেল, মিমি–নুসরতরা জিতে গেলেন, কিন্তু মহুয়াই হেরে গেলেন। সেটা শুধু তৃণমূলের পক্ষে নয়, বাংলার পক্ষেও খুব খারাপ বিষয় হবে। কারণ, একজন যোগ্য সাংসদ হয়ে ওঠার সব গুণই মহুয়ার মধ্যে আছে। লোকসভা যে মূর্খদের জায়গা নয়, সেখানে উন্নতমানের বিতর্ক হয়, এই বার্তাটা পৌঁছে দেওয়া খুব জরুরি। সৌগত রায়, সুদীপ ব্যানার্জিরা আছেন। সুগত বসু ছিলেন, কিন্তু এবার তাঁর বদলে কিনা মিমি! যদি সুব্রত মুখার্জি, মানস ভুঁইয়ারা জেতেন, তবু কিছুটা মুখরক্ষা। একা মহুয়াই অন্তত দশজন অযোগ্য সাংসদের লজ্জা ঢেকে দিতে পারেন।
সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়দের বয়স হয়েছে। এলাকাতেও সময় দিতে হয়। তাঁদের পক্ষে খেটেখুটে সেই বক্তৃতা করা একটু কঠিন। কিন্তু মহুয়ার উদ্যম অনেক বেশি থাকবে। হিন্দি, ইংরাজি দুটোতেই বেশ সাবলীল। বিধানসভায় অল্পদিনেই নজর কেড়েছেন। এখনই হলফ করে বলা যায়, যদি জেতেন, সংসদেও নজর কাড়বেন।