বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: একটু একটু করে সংসদেও যেন প্রশান্ত হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। সূত্রের দাবি, কয়েকদিন আগেই তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। ভোটের অভিজ্ঞতা, কার এলাকায় কী কী সমস্যা, এসব খোঁজ নিয়েছেন। তখনই ইঙ্গিত ছিল, সংসদে কে কবে কোন বিষয় তুলে ধরবেন, সে ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন প্রশান্ত কিশোর।
মিমি, নুসরতদের গত দুদিনের আচরণে তার কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। লোকসভায় প্রণাম করে ঢোকা, সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যাওয়া পরিকল্পনারই ফসল।দুজনেই সংসদে প্রথম মুখ খুললেন বুধবার। নিজের নিজের এলাকার স্থানীয় সমস্যা তুলে ধরলেন। মিমি তাঁর এলাকার কয়েকটি ওভারব্রিজের দাবি তুললেন। অন্যদিকে, নুসরত নিজের এলাকায় সেন্ট্রাল স্কুল চাইলেন। দুজনেই ইংরেজিতে লেখা ভাষণ পাঠ করলেন। মন দিয়ে শুনলেই বোঝা যাবে, দুটো দাবি যেন একই লোকের লেখা। এটুকু নিশ্চিত করেই বলা যায়, ওই ভাষণ মিমি বা নুসরতের নেই। সিনেমায় যেভাবে স্ক্রিপ্ট থেকে ডায়লগ বলতে হয়, লোকসভার প্রথম ভাষণ অনেকটা সেইরকমই। এত দ্রুত তাঁরা ইংরাজি পড়তে পারেন! নিশ্চিতভাবেই আগে বেশ কয়েকবার ঝালিয়ে নেওয়া ছিল।
জিরো আওয়ারে নিজেদের প্রথম ভাষণ হিসেবে মোটামুটি ঠিকই আছে। গত পাঁচ বছরে বাংলার তৃণমূল সাংসদদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সংসদে অধিকাংশই নিজেদের একেবারেই মেলে ধরতে পারেননি। প্রশ্নোত্তর থেকে উল্লেখপর্ব, বিতর্ক থেকে প্রাইভেট মেম্বার্স বিল— সর্বত্রই চূড়ান্ত ব্যর্থতা। এবার শুরু থেকেই যেন সচেতন হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কাকে দিয়ে কোন কাজটা হবে, সে বিষয়েও নিজেদের মতো করে রিসার্চ করবে প্রশান্তর বাহিনী। মিমি—নুসরতের প্রথম দিনের ভাষণে সেই কারণে খুব গুরুগম্ভীর বিষয় তুলে ধরা হয়নি। দেড়, দু মিনিটের মধ্যে এলাকার সমস্যা ও দাবি তুলে ধরার দিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই বেমানান মনে হয়নি। বিশেষ করে নুসরতের বয়ানে যে দাবি তোলা হয়েছে, দাবিটি নিতান্ত সাধারণ হলেও এলাকাভিত্তিক একটা রিসার্চ আছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে, স্বল্প বাক্যে যা সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রথমদিন সংসদে সেলফি তুলে নানা টিপ্পনির শিকার হয়েছিলেন দুই অভিনেত্রী। তাঁদের পোশাক নিয়েও নানা মহলে আপত্তি উঠেছিল। শপথের সময় নুসরতের বিয়ে এবং সেখানে মিমির উপস্থিতি নিয়েও কটাক্ষ হয়েছিল। দুজনই পরে আলাদা করে শপথ নিয়েছেন। কিন্তু এবার যেন ড্যামেজ কন্ট্রোলের দায়িত্ব প্রশান্তর টিম। শপথ নেওয়া থেকে শুরু করে প্রথম ভাষণ, অনেকটাই যেন পরিমার্জিত মনে হল দুই অভিনেত্রীকে। অন্যান্য সাংসদদের বক্তৃতা তৈরিতেও হয়ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে দেখা যাবে প্রশান্তর টিমকে। সন্ধ্যা রায়, মুূনমুন সেন বা তাপস পালরা যেভাবে সংসদের বোঝা হয়ে উঠেছিলেন, মিমি-নুসরতের ক্ষেত্রে হয়ত তেমনটা হবে না।