বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: একটা প্রচলিত কথা, সকালের সূর্যোদয় দেখেই বোঝা যায়, দিনটা কেমন যাবে। সংসদে শপথ গ্রহণ দেখে হয়ত তারই কিছুটা আভাস পাওয়া গেল। বিশেষ করে বাংলার সাংসদরা যখন শপথ নিলেন, তা প্রায় সার্কাসের পর্যায়ে পৌঁছে গেল।
কেউ জয় শ্রীরাম করলেন। কেউ জয় হিন্দ বলে গেলেন। কেউ মা কালীর মন্ত্র আউড়ে গেলেন। কেউ জয় মমতা বলে চিৎকার করলেন। কেউ মা মাটি মানুষ বলে হুঙ্কার ছাড়লেন। কেউ শপথ নিতে গিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ শুরু করে দিলেন। একেক জন ভাবলেন, তাঁরা হয়ত দারুণ কোনও কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন। গোটা দেশের কাছে বাংলাকে কতখানি হাসির খোরাক করে তুললেন, তাঁ এঁরা কেউ ভেবেও দেখলেন না।
যে বাংলা থেকে একসময় হীরেণ মুখার্জি, ত্রিদিব চৌধুরি, প্রণব মুখার্জি, সোমনাথ চ্যাটার্জি, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির মতো মানুষেরা লোকসভায় যেতেন, এখন তাঁদের বদলে কারা যাচ্ছেন! সংসদের গরিমা বোঝার মতো মানসিকতা বা শিক্ষাদীক্ষা, কোনওটাই তাঁদের নেই। কেউ এই সময়েই বিয়ে করতে বিদেশে গেলেন। কেউ আবার গেলেন সেই বিয়েতে ভোজ খেতে। তাঁরা যে কবে শপথ নেবেন, কে জানে! যাঁরা শপথ নিলেন, তাঁরাই বা কী দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন!
যত দিন যাচ্ছে, সংসদ সত্যিই যেন তামাশার জায়গা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সংসদের ইতিহাস, ঐতিহ্য কোনও কিছুই জানার দরকার নেই। কোনও কিছুই মেনে চলার দায় নেই। যা খুশি চিৎকার করলেই হল। এইসব লোক কী অবলীলায় এমপি হয়ে যাচ্ছেন। যাঁদের পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ারও যোগ্যতা নেই, তাঁরা কিনা সংসদে পৌঁছে যাচ্ছেন। এখন তো অনায়াসেই সংসদের পুরনো অধিবেশন দেখা যায়। খুব পুরনো না হোক, অন্তত কুড়ি বছর আগের কিছু ক্লিপিংস তো দেখা যায়। বেশি পেছনে যেতে হবে না। নয়ের দশকের কিছু দৃশ্যই দেখুন। তাহলেও বুঝতে পারবেন ওই কক্ষে ঢুকতে গেলে, বিতর্কে অংশ নিতে গেলে, কতকিছু জানতে হয়। এঁদের সংসদে শপথ নেওয়ার আগে অন্তত তিনমাসের একটা কোর্স করানো দরকার। যদি কিছুটা হলেও শিখতে পারেন।