অনির্বাণ বসু
আরও এক বাম বিধায়ক যোগ দিলেন তৃণমূলে। দিন সাতেক আগেই শুভেন্দু অধিকারী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সিপিএমের একটা বড় উইকেট পড়ছে। বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে জল্পনা চলছিল। শেষমেষ গেলেন জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক।
অন্য দল থেকে তৃণমূলে এলে কয়েকটি শেখানো কথা বলতে হয়। রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। সেই উন্নয়নে সামিল হতেই তৃণমূলে যোগ দিলাম। এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হল না। ধরেই নিলাম, ২০১১ থেকেই উন্নয়নের জোয়ার চলছে। তারপরেও ২০১৬ তে তিনি বামেদের হয়ে দাঁড়ালেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধেই প্রচার করলেন। বামেদের টিকিটে জেতার পর তাঁর মনে হল, তৃণমূলের নেতৃত্বে খুব উন্নয়ন হচ্ছে!
এটা অবশ্য এই রাজ্যে নতুন নয়। কিন্তু অনেকের মতো তিনিও দলবদলের কারণ বোঝাতে গিয়ে মোক্ষম একটি প্রশ্ন তুলে দিলেন। বলে ফেললেন, জিতেছিলাম ঠিকই, কিন্তু কোনও কাজ করতে পারছিলাম না। সেই যন্ত্রণা থেকেই তৃণমূলে যোগ দিলাম।
খুব বিনীত প্রশ্ন, কাজ করতে পারছিলেন না কেন? ১) বিধানসভায় বলছিলেন, কিন্তু মন্ত্রীরা পাত্তা দিচ্ছিলেন না? ২) ডিএম, এসপি, এমনকী পুলিশ কোনও কথা শুনছিল না? ৩) বিধায়ক তহবিলের টাকা পড়ে থাকছিল? প্রশাসনিক কর্তারা ইচ্ছে করে ঝুলিয়ে রাখছিলেন? ৪) শাসক দলের নানা হুমকির মধ্যে পড়তে হচ্ছিল? হেনস্থার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল? ৫) কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে ডাকা হত না? ৬) বিধায়ক হিসেবে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছিল না?
এগুলোর কোনওটাই কি শাসক দলের পক্ষে ভাল বিজ্ঞাপন? বিরোধী বিধায়ক হলে ডিএম, এসপি তো দূরের কথা, ওসি, বিডিও–রাও পাত্তা দিতে চান না। হেনস্থা করেন। এটা মোটামুটি পরিচিত ছবি। তৃণমূলের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেটাই আরও স্পষ্ট করে দিলেন দলত্যাগী বিধায়ক। যাক, ওই মঞ্চে দাঁড়িয়ে এতবড় সত্যিটা অন্তত বলতে পেরেছেন। এটার জন্য তাঁর একটা ধন্যবাদ অবশ্যই প্রাপ্য।