রজত সেনগুপ্ত
হঠাৎ ক্ষমতা পেয়ে গেলে যা হয়! বোধ বুদ্ধি থাকে না। থাকলেও লোপ পেয়ে যায়। সৌমিত্র খানের হয়েছে সেই দশা। দল ছাড়ার পর পুরনো দলকে আক্রমণ করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এসব করতে গিয়ে হঠাৎ, নিজের কেন্দ্রে অভিষেক ব্যানার্জিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসেছেন। বলেছেন, অভিষেক ব্যানার্জির ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে লড়ুক।
অভিষেকের বিরুদ্ধে তাঁর অনেক সমালোচনা থাকতেই পারে। কিন্তু বিষ্ণুপুর থেকে অভিষেক কীভাবে লড়াই করবেন? ওই আসনটি অপশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। সেই কারণেই জেলায় অনেক তাবড় তাবড় নেতা থাকা সত্ত্বেও সৌমিত্র খান ওই আসন থেকে টিকিট পেয়েছিলেন? সাড়ে চার বছর এমপি থাকার পরেও সৌমিত্র ভুলেই গেছেন ওখান থেকে দাঁড়াতে গেলে তপশিলি জাতির প্রার্থী হতে হয়। যা অভিষেক নন।
কাকে এমপি করেছিল, এবার তৃণমূলও ভাল করে বুঝুক। যাদের পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার যোগ্যতা নেই, তাদের লোকসভায় বা রাজ্যসভায় পাঠালে এরকমই হয়। এই মূর্খামির দায় যতটা সৌমিত্রর, ততটাই তৃণমূলেরও। শুধু সৌমিত্র নন, লোকসভায় তৃণমূল যাঁদের পাঠিয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই বোঝেন না লোকসভা কী জিনিস। হইহই করে বেরিয়ে যাওয়া, গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্না দেওয়া, আর নানারকম ছবি তুলে ফেসবুকে দেওয়া। এর বাইরেও যে লোকসভায় কিছু করার থাকে, তা অধিকাংশই জানেন না। তবে এলাকায় তোলাবাজির ব্যাপারে অবশ্য প্রায় সবাই কমবেশি সিদ্ধহস্ত।
থাক সে কথা। সৌমিত্র যদি একান্তই অভিষেকের বিরুদ্ধে লড়তে চান, একটা উপায় আছে। তিনি বরং তাঁর নতুন দলকে বলুন, বিষ্ণুপুর নয়, আমাকে ডায়মন্ড হারবারে টিকিট দেওয়া হোক। তাহলে সরাসরি অভিষেক ব্যানার্জির বিরুদ্ধে লড়ার সুযোগ আছে। অভিষেক বিষ্ণুপুরে দাঁড়াতে পারবেন না। কিন্তু সৌমিত্র চাইলে ডায়মন্ড হারবার থেকে দাঁড়াতেই পারেন। সৌমিত্র বরং, এমন প্রস্তাব দিয়ে দেখুন।