রজত সেনগুপ্ত
আবার একটি ভিডিও টেপ। এবারও ভাইরাল। আবার সেই মুকুল রায় আর কৈলাশ বিজযবর্গীর আলোচনা।
মুকুলের দাবি, ম্যাথু স্যামুয়েল নাকি তাঁকে ফোন করেছিলেন। তাঁর কাছে এমন এক ভিডিও আছে, যা সামনে এলে তৃণমূল শেষ হয়ে যাবে। ম্যাথু নাকি ২ কোটি চেয়েছেন।
যথারীতি এবারও মুকুলের দাবি, তাঁদের ফোন ট্যাপিং হয়েছে। তিনি নাকি আদালতে মামলা করবেন। এর আগে একবার মামলা করতে গিয়ে বেইজ্জত হয়েছে। নিশ্চিত করে বলা যায়, এবারও এই মামলা ধোপে টিকবে না। বরং কয়েকটি প্রশ্ন তুলে ধরা যাক।
১) মুকুল যখন জানেন তাঁর ফোন ট্যাপ হচ্ছে, তার পরেও এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে ফোনে কথা বলবেন? যদি সত্যিই কৈলাশ বিজয়বর্গীর সঙ্গে গোপনে কথা বলতে হত, আরও অনেক উপায় ছিল। তাতে এই কথোপকথন গোপন থাকত। তা না করে তিনি সরাসরি কৈলাশের ফোনে ফোন করলেন।
২) বোঝাই যাচ্ছে, মুকুল নিজেই চেয়েছেন কথাগুলো ছড়িয়ে পড়ুক। বিশেষ করে, কয়েকদিন আগেই তাঁদের একটি কথোপকথনের অডিও সামনে এসেছে। তারপর বাড়তি সতর্ক থাকার কথা। কিন্তু তারপরেও কৈলাশের ফোনে ফোন করেছেন। এবং এরকম একটি মারাত্মক বিষয়ে কথা বললেন।

৩) এই কথোপকথন ফাঁস হলে কার ক্ষতি? ম্যাথু যদি ভিডিও প্রকাশ করার জন্য দু কোটি চেয়ে থাকেন, তাহলে সেই ভিডিও দশগুণ দাম দিয়ে তৃণমূল কিনে নিতে পারে। দলের বদনাম এড়াতে কুড়ি কোটি কোনও ব্যাপারই নয়। তৃণমূল চুপি চুপি দিব্যি রফা করে নিতে পারত। ভিডিও নিয়ে এত ঢাকঢোল পেটানোর দরকার হত না।
৪) মুকুলের স্মাটফোনে কথার রেকর্ড হয়েছে। এবং সেই ফোন থেকেই ছড়ানোর সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। নিজেই যদি ফাঁস করে, অন্যের ফাঁস করার দরকার কী? বিশেষ করে এই অডিও ফাঁস করে যখন তৃণমূলের তেমন কোনও লাভ নেই, বরং বিজেপি–র লাভ, তখন খামোখা তৃণমূল তা ফাঁস করতে যাবে কেন?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুকুল রায়ের বোধ বুদ্ধিতেও টান পড়ছে। না থাকছে নথিপত্র, না থাকছে ন্যূনতম যুক্তি। তাই আদালতে গিয়েও বারবার তাঁকেই ল্যাজেগোবরে হতে হচ্ছে। এবারও যদি ফোন ট্যাপিং নিয়ে আদালতে যান, কোনও লাভ হবে না।
