সরল বিশ্বাস
মাল্টিপ্লেক্স নিয়ে সরকার নাকি নতুন আইন আনতে চলেছে। ১২০ দিন করে বাংলা ছবি চালাতে হবে। সরকার যখন এমন আইন এনেছে, অনেকেই দু–হাত তুলে স্বাগত জানাবেন। কেউ মন থেকে। আবার কেউ ভয়ে। কারণ, সরকার যা চায়, তার বিরোধীতা করতে নেই, এটা এই রাজ্যের অধিকাংশ লোক বুঝে গেছে।
কিন্তু একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখুন তো। বাংলার পক্ষে এটা কি সত্যিই খুব গৌরবজনক? সংরক্ষণ কাদের দিতে হয়! যারা একটু পিছিয়ে পড়েছে। তাই সংরক্ষণ দিয়ে অন্যদের সমকক্ষ করে তুলে আনতে হয়। এই নির্দেশের অর্থ হল, নিজের রাজ্যে বাংলা পিছিয়ে পড়েছে। তাই জোর করে দেখিয়ে তার সম্ভ্রম রক্ষা করতে হবে। যদি সত্যিই অবস্থাটা এমন হয়, তাহলে সেটা কি খুব গৌরবের বিষয়?
একইসঙ্গে বাহুবলীও চলেছিল। আবার কৌশিক গাঙ্গুলির বিসর্জনও চলেছি। যার যেমন রুচি, সে তেমন সিনেমা দেখেছিল। মনে রাখবেন, কালের বিচারে বিসর্জনই থেকে যাবে। বাহুবলীর আবেদন ওই দুমাস। তারপরই যথারীতি হারিয়ে গেছে। এই যে এবার পুজোয় প্রায় হাফডজন বাংলা ছবি বেরোচ্ছে, যারা দেখার, তাঁরা ঠিক দেখবেন। কাছের মাল্টিপ্লেক্সে না চললে দূরে গিয়ে দেখবেন। দরকার হলে কদিন পরেও দেখবেন। এর জন্য জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। তাছাড়া, হলমালিক যদি বোঝেন লাভ হচ্ছে, তিনি নিজেই চালাবেন। মনে রাখবেন, অবাঙালি ব্যবসায়ীরা কিন্তু ব্যবসাটা বোঝেন। বাংলার প্রতি তাঁদের দরদ না থাকতেই পারে, ব্যবসার প্রতি আছে।
তাই যেসব শিল্পীদের টুইট করার ধুম লেগেছে, তাঁরা দয়া করে ভাবুন, বাংলা সিনেমার প্রতি এটা মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়। জোর করে হলে চালাতে হচ্ছে, সংরক্ষণ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে। তার মানে বাংলা ছবি নিজের জোরে হলে জায়গা করে নিতে পারে না? একটু ভেবে দেখুন, তাহলে বুঝবেন, এই নিয়ম মোটেই গৌরবের নয়।