রক্তিম মিত্র
নিজের ঢাক নিজেই পিটিয়ে যাওয়া। সেটাই এখন সবথেকে বড় শিল্প। সস্তা প্রচারের মোহ ছাড়তে পারছেন না স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও।
বিশাল এক মালা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন লালকৃষ্ণ আদবানি, রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, সুষমা স্বরাজরা। পরিয়ে দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদিকে। আর তিনিও সেই মালা অম্লানবদনে গ্রহণ করছেন।
কী এমন বিশ্বজয় করেছেন! জানা গেল, অনাস্থা ভোটে সরকার জিতেছে। এটা তার সেলিব্রেশন। ছবিতে যথেষ্ট বিব্রতই দেখাচ্ছে আদবানি, সুষমাকে। একটা ছবি কত কথা বলে যায়! ওই ছবিতে নরেন্দ্র মোদির চোখে দিকে তাকিয়ে দেখলে অনেককিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে। এই চোখ কার চোখ, একটু গভীরভাবে দেখলেই বোঝা যাবে।
সরকার এককভাবে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছিল। তার ওপর শরিকরা সঙ্গে আছে। সংখ্যার এই অহমিকা সবসময়ই ঢাক পিটিয়ে প্রচার করা হয়। অনাস্থায় যে সরকার পড়বে না, এটা দেশসুদ্ধু সবাই জানত। সেই অনাস্থায় জেতার পর এমন সেলিব্রেশন করতে হবে! অনাস্থা তো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা হয়নি। আনা হয়েছিল সরকারের ওপর। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় মন্ত্রীসভা চলে যৌথ দায়িত্বে। জয় হলে সবার জয়। গণতন্ত্রের এই প্রাথমিক বিষয়টা কী বেমালুম ভুলে গেলেন! আর প্রধানমন্ত্রীও সামান্য এই অনাস্থা জয়ে সংবর্ধনা নিতে রাজি হয়ে গেলেন।
দলের বাকিরা গুণকীর্তন করে গেলেন। কিন্তু এতেও যে তৃপ্তি হওয়ার কথা নয়। আসল ঢাকের আওয়াজটাই যে বাকি। এবার নিজেই নিজের ঢাক পেটাতে শুরু করলেন। একটা অনাস্থা জেতায় এত উল্লাস! কেনিয়াকে হারিয়ে ভারত যদি হুডখোলা জিপে ঘোরে, কেমন লাগবে! ব্যাপারটা অনেকটা সেরকমই। একদিকে ৩০০–র কাছাকাছি আসন পাওয়া বিজেপি। অন্যদিকে, মাত্র ৪৪ আসন পাওয়া কংগ্রেস। তাতেও কংগ্রেসকে এমন বেনজির আক্রমণ!
সরকার সত্যিই বড় দেউলিয়া। এই সংবর্ধনা আবার যেন সেই সহজ সত্যিটাই বুঝিয়ে দিয়ে গেল।