‌কোন মুখে সিবিআই চাইছেন?‌

প্রিয়ম বোস

যুবরাজের হুমকির পরেই পুরুলিয়ায় পর পর দুটি মৃত্যুর ঘটনা। খুন না আত্মহত্যা?‌ পুলিশ কিছু বলার আগেই নেতা–মন্ত্রীরা আত্মহত্যার তত্ত্ব বাজারে ছেড়ে দিলেন। এবার পুলিশ আর ভিন্ন কথা বলে কী করে?‌ গড়া হল বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ড। পাঁচ জনের চিকিৎসকের দল জানাল, এটা খুন নয়, আত্মহত্যা। আর সেটাই প্রেস কনফারেন্স করে ফলাও করে ঘোষণা করলেন পুলিশ সুপার।

পাঁচজন চিকিৎসক বলছেন, আত্মহত্যা। পুলিশ সুপার বলছেন আত্মহত্যা। তবু কেন জানি না, বিশ্বাস হচ্ছে না। এত তৎপরতা দেখেই মনে হচ্ছে, নিশ্চয় কিছু একটা আড়াল করতে চাইছে প্রশাসন। যদি বলা হত খুন এবং খুনিকে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হত, এই সরকারের ভাবমূর্তি হয়ত উজ্জ্বলই হত। কিন্তু কেন জানি, শুরুতে অস্বীকার করাটাই এই সরকারের প্রাথমিক কর্তব্য। স্বীকার করলে পাছে সরকারের বদনাম হয়ে যায়!‌ অতএব, চেপে যাও। অস্বীকার করো। পারলে, অন্যদের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে দাও।

cbi

যুবরাজ বলে ফেলেছিলেন, পুরুলিয়ায় গিয়ে বিরোধীশূন্য করে আসব। কিন্তু অতি উৎসাহে যে এমন ‘‌আত্মহত্যা’‌র জোয়ার বয়ে যাবে, বুঝতে পারেননি। ব্যাপারটা এভাবে ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে আসবে, হয়ত বুঝতে পারেননি। এখন উন্নয়নের জোয়ারে দুখানা মৃত্যু যখন হয়ে গেল, তখন নতুন পুলিশ সুপারের প্রথম কাজ হল ড্যামেজ কন্ট্রোল করা।

বিজেপি যথারীতি সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে। তাঁদের দাবি, রাজ্য পুলিশকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা শাসক দলের কতা অনুআয়ী রিপোর্ট তৈরি করেছে। এক্ষেত্রে বিজেপি–‌র অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বরং, শাসক দলের সাফাইয়ের থেকে বিরোধীদের অভিযোগ অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য। কিন্তু সিবিআই তদন্তের দাবি করে কীই বা হবে?‌ সিবিআই–‌এর মুরোদ কতখানি, এই চার বছরে বোঝেননি?‌

মোদ্দা কথা, অন্যরা সিবিআই চাইছে, চাক। দয়া করে আপনারা আর সিবিআই চাইবেন না। কারণ, সিবিআই–‌কে যে জায়গায় পাঠিয়েছেন, তার বিশ্বাসযোগ্যতা আরও তলানিতে। চার বছরে সারদা তদন্ত কতটুকু এগিয়েছে?‌ একজন কনস্টেবল বা একজন সিভিক ভলান্টিয়ার এক মাসের মধ্যে এদের থেকে ঢের ভাল তদন্ত করতে পারবেন। তাঁরা অন্তত এমন অশ্বডিম্ব প্রসব করতেন না। দিল্লিকে বোঝান। আগে সারদা তদন্ত শেষ করুন। তারপর সিবিআই তদন্ত দাবি করবেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *