সেই দিন খুব দূরে নেই, নীতীশবাবু

সুরঞ্জন ভদ্র

নীতীশ কুমার সমীপেষু

শেষ কবে বাংলা কাগজে আপনার ছবি দেখেছি, মনে পড়ছে না। অনেকদিন পর চোখে পড়ল। লালুপ্রসাদের ছেলের বিয়েতে আপনি অন্যতম অতিথি। ভেবে দেখুন, আপনার ছবি ছাপা হচ্ছে, আপনি যখন লালুর ছেলের বিয়েতে যাচ্ছেন।

মাত্র কয়েক মাসেই নিজেকে কীভাবে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন। বছর পাঁচেক আগেও সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার নাম উঠে আসত। পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আপনার নাম থাকত একেবারেই সামনের সারিতে। একথা মানতেই হবে, বিহারকে অনেকটাই পাল্টে দিয়েছিলেন।

nitish kumar

তারপর জল অনেকদিকে গড়াল। বিজেপির সঙ্গে বিচ্ছেদ হল। লোকসভায় ভরাডুবি হল। লালুর সঙ্গে জোট বাঁধলেন। প্রবল বিজেপি বিরোধী হাওয়া তুললেন। ভোটে লালুর দলের আসন বেশি ছিল। তা সত্ত্বেও তিনি আপনাকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিলেন। আপনার সরকার চালানোর পথে তেমন কোনও বড় বাধাও আসেনি। বিরাট কোনও অন্যায় আবদারও মেনে নিতে হয়নি।

তা সত্ত্বেও, কী মোহে, কে জানে, আপনি ছুটলেন বিজেপি শিবিরে। ভুলে গেলেন, এই ভোটাররাই আপনাকে বিজেপির বিরুদ্ধে জিতিয়েছিল। নতুন করে জিতে আসার সৎ সাহসও দেখালেন না। তারপর কী হল?‌ মিলিজুলি মন্ত্রীসভা। ক্রমশ বুঝতে পারছেন, এখন রাশ আপনার হাতে থাকছে না। বিজেপির একের পর এক অন্যায় আবদার মেনে নিতে হচ্ছে। বিজেপির নানা হুমকিতে আপনি কার্যত গুটিয়ে থাকছেন।

কী ভেবেছিলেন, বিজেপি আপনার হাতকে শক্তিশালী করবে?‌ কোনও সম্ভাবনা নেই। তৈরি থাকুন, আপনার দল থেকে ভাঙন ধরিয়ে নিজেরা শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করবে। আপনাকে ক্রমশ দুর্বল করার চেষ্টা করবে। লোকসভার ভাগাভাগিতেও খুব একটা সুবিধা হওয়ার নয়। অল্প আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। পরের বিধানসভাতেও আপনাকে সামনে রেখে বিজেপি লড়াই করবে কিনা, জোর সন্দেহ আছে। পরের বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয় শক্তি হিসেবে হয়ত আপনাকে দেখা যাবে। তখন হয়ত বিজেপির ওপর গায়ের ঝাল মেটাতে আপনি তেজস্বীপ্রসাদকে সমর্থন করবেন।

সেই দিন হয়ত খুব দূরে নেই।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.