ধীমান সাহা
কখনও কখনও আদালতের কাজকর্মও ঠিক মাথায় ঢোকে না। রায়ের পেছনে ঠিকঠাক যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। একটা রায় উস্কে দিয়ে যায় অনেক প্রশ্নকে।
অনেক আগে থেকেই কোনও কোনও বিরোধী দল অনলাইনে মনোনয়নের দাবি জানিয়েছিল। তাঁদের মনে হয়েছিল, ব্লক অফিসকে ঘিরে যেভাবে সন্ত্রাসের আবহ, পুলিশ যেভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে দাঁড়িয়ে, তাতে মনোনয়ন জমা দিতে গেলেই আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। তাই অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়া গেলে অনেকেই মনোনয়ন দিতে পারবেন।
সেই আবেদন নির্বাচন কমিশন খারিজ করে দিয়েছিল। এমনকী হাইকোর্টও এই দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি।
অথচ, দেখা গেল, ভাঙড়ের ৯ জন প্রার্থী হোয়াটসঅ্যাপ করে মনোনয়ন পাঠালেন। মনোনয়নের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর কোর্ট নির্দেশ দিল, সেই মনোনয়ন বহাল রাখতে হবে। অর্থাৎ, এই ৯ জনকে প্রার্থী হিসেবে ধরতে হবে। এই মনোনয়ন বাতিল করা চলবে না।
যদি শুধু এই ৯ জনের কথা ভাবা যায়, তাহলে অত্যন্ত সঠিক রায়। যাঁরা সন্ত্রাসের কারণে আসতে পারেননি, তাঁদের মনোনয়ন বৈধ করে একদিক দিয়ে ইতিবাচক বার্তাই দিলেন বিচারপতি।
কিন্তু মুদ্রার উল্টোপিঠে থাকছে একটি অপ্রিয় প্রশ্ন। হোয়াটসঅ্যাপ বা ই মেলে যদি মনোনয়ন দেওয়া যায়, তাহলে কোর্ট সেটা আগে নির্দেশ দিল না কেন? নির্বাচন কমিশনই বা এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি দিল না কেন? তাহলে তো আরও হাজার হাজার বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারতেন। ইমেলে বা হোয়াটসঅ্যাপে মনোনয়ন দেওয়ার আবেদন খারিজ করে দিলেন। অথচ, যাঁরা হোয়াটসঅ্যাপে মনোনয়ন দিলেন, তাঁদের মনোনয়ন গ্রাহ্য হল। এটা কোন যুক্তিতে সম্ভব, মাথায় ঢুকছে না। আদালত নিজেই তো নিজের রায়কে খণ্ডন করল। ডিভিশন বেঞ্চে বা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দিল।

